রাজবাড়ীতে থেমে নেই মহাবিপন্ন বাগাড় শিকার, প্রকাশ্যে বিক্রি চলছে

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলায় আজ শুক্রবার সকালে নিলামে তোলা হয় প্রায় ২৭ কেজি ওজনের বাগাড়টি। দৌলতদিয়া ঘাট বাজারের একটি আড়তেছবি: প্রথম আলো

পদ্মা ও পার্শ্ববর্তী যমুনা নদীতে পানি বাড়ায় প্রায় প্রতিদিনই জেলেদের জালে ধরা পড়ছে মহাবিপন্ন বাগাড়। মাছটির শিকার, পরিবহন ও বিক্রি নিষিদ্ধ থাকলেও রাজবাড়ীতে প্রকাশ্যে নিলামে বিক্রি অব্যাহত আছে। চলতি সপ্তাহে দৌলতদিয়া ঘাট বাজারে অন্তত ১০টি বাগাড় প্রকাশ্যে নিলামে বিক্রি হয়েছে।

মৎস্যজীবী ও ব্যবসায়ীরা জানান, বর্ষা মৌসুমে নদীতে পানি বাড়ায় প্রতিদিনই জেলেদের জালে ধরা পড়ছে বড় বড় মাছ। রুই, কাতলা, পাঙাশ ও ইলিশের পাশাপাশি মহাবিপন্ন বাগাড়ও ধরা পড়ছে। স্থানীয় জেলে ছাড়াও সিরাজগঞ্জ, পাবনা, মানিকগঞ্জ ও ফরিদপুর অঞ্চলের জেলেরা নদীতে জাল ফেলে এসব মাছ শিকার করছেন।

আরও পড়ুন

আজ শুক্রবার ভোরে কুশাহাটা এলাকায় পদ্মা ও যমুনা নদীর মোহনায় জাল ফেলে একটি বাগাড় ধরেন পাবনার জেলেরা। বিক্রির জন্য সকালে সেটি নিয়ে যান দৌলতদিয়া বাজারের হালিমের আড়তে। প্রায় ২৭ কেজি ওজনের বাগাড়টি বিক্রির জন্য নিলামে তোলা হলে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে সেটি কিনে নেন স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ী শাহজাহান শেখ। ১ হাজার ৪৮০ টাকা কেজি দরে মোট ৪০ হাজার টাকায় কেনা হয় মাছটি। পরে আফজাল হোসেন নামের সিরাজগঞ্জের এক কাপড় ব্যবসায়ীর কাছে ১ হাজার ৬০০ টাকা কেজি দরে মোট ৪৩ হাজার ২০০ টাকায় বাগাড়টি বিক্রি করেন।

শাহজাহান শেখ জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে জাহিদ নামের আরেক জেলের কাছ থেকে ২৭ কেজি ওজনের আরেকটি বাগাড় ৪০ হাজার ৫০০ টাকায় কিনে ৪৩ হাজার টাকায় বিক্রি করেন। ৪ থেকে ৫ দিন আগে প্রায় ১৮ কেজি ওজনের আরেকটি বাগাড় কিনেছিলেন। ৩০ জুন দৌলতদিয়া বাজারে মাঝারি আকারের ৩টি এবং ২৮ জুন প্রায় ৫০ কেজি ওজনের আরেকটি বাগাড় বিক্রি করা হয়।

আরও পড়ুন

আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘের তালিকা অনুযায়ী, বাগাড় একটি মহাবিপন্ন প্রাণী। বন্য প্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী বাগাড় শিকার, ধরা ও বিক্রি আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।

দৌলতদিয়া ঘাট মাছ বাজারের পাশেই দৌলতদিয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ি। ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক ত্রিনাথ সাহার কাছে জানতে চাইলে বলেন, বাগাড় শিকার ও বিক্রি বন্ধে ব্যবস্থা নিতে বন বিভাগ এবং উপজেলা প্রশাসনকে অনুরোধ করা হয়েছে। দুই দিন ধরে মাইকিং করে জেলে এবং ব্যবসায়ীদের সতর্কও করা হয়।

আরও পড়ুন

গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাহিদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, মৌখিকভাবে জেলে ও ব্যবসায়ীদের বারণ করা হয়েছে। তিনি জানান, শিগগিরই উপজেলা প্রশাসন ও মৎস্য বিভাগের উদ্যোগে জেলে এবং ব্যবসায়ীদের নিয়ে সচেতনতামূলক সভার আয়োজন করা হবে।