মারামারির ঘটনায় আট শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত রিজেন্ট বোর্ডের

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
ফাইল ছবি

মারামারির ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার সত্যতা পাওয়ায় যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) আট শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আজ শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম রিজেন্ট বোর্ডের ৯৬তম সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

যবিপ্রবির প্রশাসনিক ভবনের সম্মেলনকক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রিজেন্ট বোর্ডের সভাপতি উপাচার্য মো. আনোয়ার হোসেন সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো বিষয়ে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। রিজেন্ট বোর্ডের সদস্যদের অনেকে ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে এবং সশরীর সভায় অংশ নেন। লিখিত বক্তব্যে উপাচার্য ৭ ডিসেম্বর লিফট অপারেটর নিয়োগ বোর্ডে উদ্ভূত ঘটনা বোর্ডের সদস্যদের অবহিত করেন।

আরও পড়ুন

সভায় আট শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করা হয়েছে। তাঁরা হলেন গণিত বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সোহেল রানা ও তানভীর আহমেদ ওরফে আবির, একই বিভাগের শিক্ষার্থী রেদওয়ান আহমেদ ওরফে রাফি, ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থী রাইসুল হক ওরফে রানা, ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী মো. বেলাল হোসেন, কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল (সিএসই) বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ শোয়েব, ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী ফয়সাল আহমেদ ওরফে রকি এবং শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নৃপেন্দ্রনাথ রায়।

শেষ পর্যন্ত সভায় মানবিক দিক বিবেচনা করে আজীবন বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের শাস্তির মেয়াদ দুই বছর করা হয়েছে।

গত ১৪ অক্টোবর বিএমই বিভাগের শিক্ষার্থীদের মারধরের ঘটনায় সোহেল রানাকে আজীবন ও তানভীর আহমেদকে ছয় মাসের জন্য; একই দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে মারামারির ঘটনায় সোহেল রানা ও রেদওয়ান আহমেদকে আজীবন; রাইসুল হক, বেলাল হোসেনকে দুই বছর এবং মোহাম্মদ শোয়েব, ফয়সাল আহমেদকে এক বছরের জন্য বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়। একই সঙ্গে ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত, মিথ্যা ঘটনা সাজানো ও তদন্ত কমিটির কাছে মিথ্যা তথ্য দেওয়ার জন্য নৃপেন্দ্রনাথ রায়কে আজীবন বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

তবে শেষ পর্যন্ত সভায় মানবিক দিক বিবেচনা করে আজীবন বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের শাস্তির মেয়াদ দুই বছর করা হয়েছে। এ সময় তাঁরা কেউ কোনো ধরনের অসদাচরণের সঙ্গে জড়ালে কারণ দর্শানো ব্যতিরেকে তাঁদের আজীবন বহিষ্কারাদেশের শাস্তি পুনর্বহাল করার সিদ্ধান্ত হয়।

একই ঘটনায় শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আল-আমিন, শাহিনুর ইসলাম ও মো. রাজিব ওরফে রাজুকে সতর্কীকরণ চিঠি এবং অভিভাবকের উপস্থিতিতে স্বাক্ষর প্রদানের মাধ্যমে মুচলেকা দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। এটি না করলে তাঁদেরও ছয় মাসের বহিষ্কার করা হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়। এ ছাড়া রিজেন্ট বোর্ডের সভায় গত ১৬ জুলাই কোষাধ্যক্ষের অফিসে ডিন, প্রক্টর ও প্রভোস্টদের উপস্থিতিতে অসদাচরণ করায় শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মো. সোহেল রানা এবং পরিবেশবিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের তানভীর ফয়সালকে সতর্কীকরণ চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সভায় উপস্থিত ছিলেন যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. আনিছুর রহমান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিশ্ববিদ্যালয়) মো. আবদুল মতিন, যুগ্ম সচিব সৈয়দা নওয়ারা জাহান, যশোরের আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কাওছার উদ্দিন আহম্মদ, আইসিডিডিআরবির বায়োসেফটি অ্যান্ড বিএসএল-৩ ল্যাবরেটরির প্রধান আসাদুল গনি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক কৌশিক সাহা, ইউজিসি অধ্যাপক শরীফ এনামুল কবির, ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতাল ও রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও জ্যেষ্ঠ কনসালট্যান্ট এম এ রশীদ, যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. আহসান হাবীব, সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মর্জিনা আক্তার, যশোর সরকারি মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক এ এইচ এম আহসান হাবীব, রিজেন্ট বোর্ডের সচিব ও রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. আহসান হাবীব প্রমুখ।