বাস বন্ধের আগেই রংপুরে আসা শুরু করেছেন নেতা–কর্মীরা

বিএনপির গণসমাবেশে যোগ দিতে দুদিন আগেই রংপুরে বিএনপির নেতা–কর্মীরা। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রংপুর নগরের কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে
ছবি: প্রথম আলো

রংপুরে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশের দুদিন আগেই বিভিন্ন জেলা থেকে দলের নেতা–কর্মীরা আসতে শুরু করেছেন। গণসমাবেশের আগের দিন ও গণসমাবেশের দিন পরিবহন ধর্মঘটের ঘোষণা দেওয়ায় আজ বৃহস্পতিবার বিকেলেই অনেকে রংপুরে পৌঁছে গেছেন। তাঁদের কেউ কেউ আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুদের বাড়িতে উঠছেন। কেউ বিভিন্ন আবাসিক হোটেল ও মেসেও ঠাঁই নিয়েছেন।

মহাসড়কে অবৈধ যান চলাচল বন্ধসহ কয়েকটি দাবিতে আগামীকাল শুক্রবার সকাল থেকে দুই দিন অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার সব রুটে বাস চলাচল বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে রংপুর জেলা বাস মালিক সমিতি। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সমিতির এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। আগামী শনিবার রংপুরে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপির নেতা-কর্মীদের ভাষ্য, গণসমাবেশে মানুষের উপস্থিতি ঠেকাতে বাস বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে বাস মালিক সমিতির নেতারা এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে। বৃহস্পতিবার বিকেলে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, আগেভাগে রংপুরে পৌঁছে যাওয়া নেতা–কর্মীরা বিক্ষিপ্তভাবে সেখানে আসছেন। মাঠের এদিক–সেদিক ঘুরছেন, ছবি তুলছেন। আবার ফিরে যাচ্ছেন। এমন ৩০ জনের সঙ্গে এই প্রতিবেদকের কথা হয়। তবে তাঁদের মধ্যে অনেকেই নাম–ঠিকানা জানাতে অপারগতা জানিয়েছেন।

আরও পড়ুন

নেতা–কর্মীরা বলছেন, ময়মনসিংহ ও খুলনার ধারাবাহিকতায় রংপুরেও বিএনপির গণসমাবেশের আগে গণপরিবহন বন্ধ করা হতে পারে বলে তাঁরা আশঙ্কা করছিলেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে সেই আশঙ্কা সত্যি করে পরিবহন ধর্মঘটের ঘোষণা এল। ফলে অনেকেই দুপুরের পর থেকে বাসে করে রংপুর আসতে শুরু করেন। কেউ আসছেন ট্রেনে করে।

লালমনিরহাটের সীমান্ত এলাকা পাটগ্রাম উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা মোস্তাফিজুর রহমান (৪৬) ও রহিদুল ইসলাম (৪০)। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ট্রেনে করে পাটগ্রাম থেকে রংপুর স্টেশনে এসে পৌঁছান তাঁরা। মোস্তাফিজার রহমান বলেন, তাঁর মতো অনেকেই দুপুরের ট্রেনে রংপুরে এসেছেন। কোথায় থাকবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এত দূর থেকে গণসমাবেশে আসলাম, থাকার জন্য কি চিন্তা করতে হয়? মিলে যাবে কোনো নেতা কিংবা কর্মীর বাড়ি।’

রহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এভাবে বাধা পাওয়ার পর বেশ মজাই লাগছে। রংপুরের সব জনগণের মুখে মুখে এখন একটাই অলোচনা, বিএনপির সমাবেশ। এভাবে বাসের চাকা বন্ধ করে কি সমাবেশ ঠেকানো সম্ভব?’

গণসমাবেশস্থল পরিদর্শন করছেন বিএনপির নেতারা। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে
ছবি: প্রথম আলো

বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা থেকে রংপুরে পৌঁছেছেন রংপুর বিভাগীয় গণসমাবেশ আয়োজনের দায়িত্বে থাকা বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সংসদ সদস্য হারুন অর রশীদ। সমাবেশস্থল পরিদর্শন শেষে আজ বিকেলে তিনি বলেন, ‘সমাবেশের আগে গণপরিবহন বন্ধ করা একটা নতুন নাটক। আগামী শনিবার রংপুরে আমরাও খেলা দেখাব। স্মরণকালের সর্ববৃহৎ গণসমাবেশ হবে এদিন। যার মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হবে যে সারা দেশের মানুষ বিএনপির সঙ্গে আছে।’

আরও পড়ুন

পরিবহন ধর্মঘট দিয়ে যেন জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করা না হয়, এ জন্য পরিবহনমালিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শামসুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘আজ রাতের মধ্যে সমাবেশে যোগদান করা লোকজন চলে আসবে। বিএনপি নেতা-কর্মীদের বাড়িগুলো সবার জন্য উন্মুক্ত।’