রংপুর মেডিকেলের ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি তৃতীয় দিনের মতো চলছে

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালফাইল ছবি

বেতন-ভাতা বাড়ানোর দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মবিরতি পালন করেছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা। এতে সাধারণ রোগীরা কিছুটা ভোগান্তিতে পড়লেও অন্যান্য চিকিৎসকদের দিয়ে হাসপাতালের সেবা কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হয়েছে।

ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা জানান, তাঁরা মাত্র ১৫ হাজার টাকা বেতন পান। বর্তমান সময়ে ওই বেতনে চলা কঠিন। গত বছর বেতন-ভাতা বাড়ানোর দাবিতে তাঁরা আন্দোলন শুরু করেন। তখন তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রীর আশ্বাসে তাঁরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেন। কিন্তু সেই দাবি এখনো উপেক্ষিত। তাঁরা বেতন-ভাতা ৩০ হাজার টাকা করার দাবি জানিয়েছেন।

আজ মঙ্গলবার মহান স্বাধীনতা দিবসের সরকারি ছুটি। হাসপাতালের পরিচালকের দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এক হাজার শয্যার হাসপাতালে আড়াই গুণের বেশি রোগী ভর্তি থাকেন। রোজার মাস হওয়ায় রোগী কিছুটা কম। আজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন ১ হাজার ৭০০ রোগী।

আজ দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত সরেজমিনে হাসপাতালের তিনটি ওয়ার্ড ঘুরে দেখা গেছে, ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা কর্মবিরতি পালন করছেন। অন্যান্য চিকিৎসকদের মাধ্যমে হাসপাতালের সেবা কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এতে সাধারণ চিকিৎসকেরা হিমশিম খাচ্ছেন। হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে গিয়ে কোনো শয্যা খালি পাওয়া যায়নি। কর্মবিরতির কারণে সব সময় চিকিৎসক পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ আছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক রোগীর স্বজন প্রথম আলোকে বলেন, তিন দিন ধরে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ধর্মঘট চলছে। বিকেলে ও রাতে চিকিৎসক পাওয়া যায় না। তবে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চিকিৎসক ছিল। খুব একটা অসুবিধা হচ্ছে না। ওয়ার্ডের কর্তব্যরত স্টাফ নার্স বোরহানউদ্দিন বলেন, সেবার কোনো ত্রুটি হচ্ছে না।

এ সময় মেডিসিন বিভাগের প্রধান ও কলেজের অধ্যক্ষ মাহফুজার রহমানকে ওয়ার্ডে পাওয়া যায়। তিনি বলেন, ‘রমজান মাস হওয়ায় রোগীর চাপ কম। ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি চলায় মধ্যস্তরের চিকিৎসকদের দিয়ে সেবা দেওয়া হচ্ছে। কিছুটা অসুবিধা হলেও সামলে নেওয়া হচ্ছে। চিকিৎসার কোনো ত্রুটি করা হচ্ছে না।’

এদিকে গতকাল সোমবার দুপুরে হাসপাতালের পরিচালক বরাবর ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের পক্ষ থেকে দুই দফা দাবি–সংবলিত একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ রংপুরের আহ্বায়ক চিকিৎসক রানা আজ প্রথম আলোকে বলেন, বেতন–ভাতা বৃদ্ধি, চিকিৎসক সুরক্ষা আইন ও চিকিৎসকদের কর্মস্থল নিরাপদের দাবিতে পরিচালককে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো সমাধান আসেনি।

জানতে চাইলে হাসপাতালের পরিচালক মোহাম্মদ ইউনুস আলী প্রথম আলোকে বলেন, রোজার মাস হওয়ায় রোগীর চাপ কম। কর্মবিরতির কারণে কিছুটা সমস্যা হলেও মিড–লেভেলের চিকিৎসকদের দিয়ে সেবা দেওয়া হচ্ছে। অন্য চিকিৎসকেরাও পালা করে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন। যাতে চিকিৎসার কোনো ব্যাঘাত না ঘটে। ইন্টার্ন চিকিৎসকদের দাবির বিষয়ে কাল (বুধবার) তাঁদের সঙ্গে বৈঠক করা হবে।