জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগে চারটি বাস আটক

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগে চারটি বাস আটকে রেখেছেন শিক্ষার্থীরা। আজ মঙ্গলবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকসংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কেছবি: প্রথম আলো

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে চলাচলকারী ওয়েলকাম পরিবহনের একটি বাসের চালক ও সহযোগীর বিরুদ্ধে। আজ মঙ্গলবার বেলা দুইটার দিকে সাভারের ব্যাংক কলোনি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার জেরে বিকেল পাঁচটার দিকে ওয়েলকাম পরিবহনের চারটি বাস আটক করেছেন ভুক্তভোগীর সহপাঠী এবং হলের কয়েকজন শিক্ষার্থী।

ভুক্তভোগী মুহাইমিনুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতাত্ত্বিক বিজ্ঞান বিভাগের ৫০তম ব্যাচের ছাত্র এবং মীর মশাররফ হোসেন হলে থাকেন। অভিযুক্ত বাসের নম্বর (ঢাকা মেট্রো ব-১৪৯০৮৪)। তবে ওই বাসের চালক ও সহযোগীকে শনাক্ত করা যায়নি।

ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার বেলা দুইটার দিকে রাজধানী ঢাকা থেকে ক্যাম্পাসে ফিরছিলেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। তিনি ৪০ টাকা ভাড়া দেন। তবে বাসটি সাভারের ব্যাংক কলোনি এসে সামনের দিকে আর যাবে না বলে জানায়। তখন ওই ছাত্র বাকি টাকা ফেরত চাইলে বাসের সহযোগীর সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে বাসের চালক এবং সহযোগী মিলে তাঁকে মারধর করে বাস থেকে ফেলে দেন বলে অভিযোগ তাঁর।

আরও পড়ুন

মুহাইমিনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাসের হেলপার আমার জামার কলার ধরে মারধর করে এবং বাস থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। পরে আমি বাসের নম্বর প্লেটের ছবি তুলে রাখি এবং বিষয়টি বন্ধুবান্ধবকে জানাই। আমার মারধরের ঘটনায় জড়িত বাসের চালক ও হেলপারের শাস্তি চাই, যাতে তারা আর কোনো শিক্ষার্থীর সাথে এমন আচরণ না করে।’

আজ বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকসংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের আরিচাগামী লেনে ওয়েলকাম পরিবহনের বাস থামিয়ে চাবি নিয়ে নিচ্ছেন একদল শিক্ষার্থী। এ সময় বাসে থাকা যাত্রীদের ভোগান্তিতে পড়তে দেখা যায়।

এদিকে আটকে রাখা একটি বাসের চালক মাজেদুল ইসলাম এবং সহযোগী মো. লিমনকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে। ওই বাসের চালক মাজেদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছাত্ররা আমাদের বাস থামিয়েই বলতে শুরু করে আমাদের কোন বাস নাকি কাউকে চাপা দিয়ে মেরে ফেলছে। এটা বলেই তারা আমার বাসের চাবি নিয়ে নেয় এবং আমাদের কুত্তার মতো মেরেছে। আমার হেলপারের দুই টিপের প্রায় ৬ হাজারের মতো টাকা ছিল। ওই ছাত্ররা যখন হেলপারকে বাস থেকে নামিয়ে নিয়ে যায়, তখন সে ভয়ে টাকাগুলো বাসের দরজার পাশের সিটের নিচে রাখছিল, পরে আর টাকাগুলো পাইনি।’

আরও পড়ুন

এ বিষয়ে ওয়েলকাম পরিবহনের ম্যানেজার দ্বীন ইসলাম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের বাসের স্টাফ জানিয়েছে। এখন অভিযুক্তদের শনাক্ত করে বাসগুলো ছাড়ানোর ব্যবস্থা করতে হবে। আমার তো ওই রাস্তায় ব্যবসা করা লাগবে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মো. আলমগীর কবির বলেন, বাস আটকের তথ্য পেয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। বিস্তারিত জানার জন্য বাস আটকের ওখানে লোক পাঠিয়েছেন।