কর্মীদের পরীক্ষার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক আটকালেন অছাত্র ছাত্রলীগ নেতা

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
ফাইল ছবি

দুই কর্মীকে পরীক্ষায় বসতে না দেওয়ায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক আটকে দেন ছাত্রলীগ নেতা রাজু মুন্সী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে কিছুক্ষণ পর ফটক খুলে দেওয়া হয়।

দুই কর্মী আবদুল্লাহ আল জাবেদ ও রিয়াজ মোস্তফা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।

তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা কমিটির সভাপতি সহকারী অধ্যাপক ফারিহা জেসমিন বলেন, একাডেমিক কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যাঁদের ৫০ শতাংশ উপস্থিতি ছিল, তাঁদের পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষায়ও ওই দুই ছাত্রের পর্যাপ্ত উপস্থিতি ছিল না। তখন তৃতীয় বর্ষে অন্তত ৫০ শতাংশ উপস্থিত থাকার শর্তে তাঁদের পরীক্ষা দিতে দেওয়া হয়। কিন্তু এ বছরও তাঁদের উপস্থিতি পর্যাপ্ত ছিল না।

তবে দুজনের উপস্থিতির হার জানতে চাইলে ফারিহা জেসমিন বিভাগের সভাপতি সুজিত কুমার দত্তের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন। সুজিত কুমার দত্ত প্রথম আলোকে জানান, উপস্থিতি কম থাকায় অনেককেই পরীক্ষায় বসার সুযোগ দেওয়া হয়নি। বিস্তারিত তিনি কাগজপত্র দেখে জানাবেন।

কেন পরীক্ষা দিতে দেওয়া হয়নি, এমন প্রশ্নের জবাবে আবদুল্লাহ আল জাবেদ বলেন, পারিবারিক সমস্যার কারণে এ বছরও তাঁরা ক্লাস করতে পারেননি। তাঁদের দুজনের ৪০ শতাংশ উপস্থিতি ছিল। অন্যদের ৪০ শতাংশ উপস্থিতিতেই পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। তাঁদের দেওয়া হয়নি।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা শুরু হয়েছে গত ১০ মে। আজ ওই বর্ষের তৃতীয় পরীক্ষা ছিল। এ বিষয়ে রাজু মুন্সী বলেন, বহিষ্কার ও মামলার কারণে তাঁরা দুজন ঠিকমতো ক্লাস করতে পারেননি। তাই তাঁদের প্রথম দুটি পরীক্ষা দিতে দেওয়া হয়নি। আজকে পরীক্ষা দিতে না পারলে তাঁদের ইয়ার লস হতো। তাই তিনি প্রতিবাদ করেছেন যেন দুই কর্মীকে পরীক্ষা দিতে দেওয়া হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর নূরুল আজিম সিকদার বলেন, তাঁরা রাজু মুন্সীকে মূল ফটক আটকাতে দেননি। বিভাগ পরীক্ষা দিতে দেবে কি না, এটা বিভাগের একার সিদ্ধান্ত।
রাজু মুন্সী অ্যাকাউন্টিং বিভাগের ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেনের অনুসারী। অন্তত তিন থেকে চার বছর আগে তাঁর ছাত্রত্ব শেষ হয়েছে। এরপরও শাহজালাল হলের ২১৮ নম্বর কক্ষটি একাই দখল করে থাকেন তিনি। এ ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে মারধর, হুমকি, চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগ রয়েছে।

ছাত্রত্ব না থাকা শিক্ষার্থীদের ১৫ মার্চের মধ্যে ক্যাম্পাস ও হল না ছাড়লে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে অছাত্র কেউ কীভাবে ফটক আটকালেন, তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, এ ব্যাপারে জানতে চাইলে প্রক্টর নূরুল আজিম সিকদার কোনো উত্তর দিতে রাজি হননি।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন