ওই মার্কেটের পাঁচ জন্য ব্যবসায়ী প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগ নেতাদের মহড়ার পরে আতঙ্কিত হয়ে ব্যবসায়ীরা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছেন। অনেকেই আজ আওয়ামী লীগ নেতাদের কাছে ভাড়া দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আবার অনেকে ভাড়া না দেওয়ার পক্ষে অবস্থান দিয়েছেন।
ভাড়া দেওয়ার পক্ষের ব্যবসায়ীদের যুক্তি, ভাড়া না দিলে আওয়ামী লীগের নেতারা ঝামেলা করবেন। তাঁরা ঝামেলায় জড়াতে চান না। তা ছাড়া রমজান ও সামনে ঈদের সময় দোকান বন্ধ থাকলে বড় ধরনের ক্ষতি হবে।
অন্যদিকে ভাড়া না দেওয়ার পক্ষের ব্যবসায়ীদের যুক্তি, তাঁরা আক্কেল আলীর সঙ্গে স্ট্যাম্পে চুক্তি করে দোকান ভাড়া নিয়েছেন। আওয়ামী লীগ নেতাদের কাছে ভাড়া দিলে সেটার দায়দায়িত্ব আক্কেল আলী নেবেন না। দুজনকে ভাড়া দেওয়ার সুযোগও নেই। আওয়ামী লীগ নেতাদের কাছে ভাড়া দিলে ভবিষ্যতে সেটির আইনগত কোনো বৈধতা থাকবে না।
ব্যবসায়ীরা জানান, বৃহস্পতিবার ওই মার্কেটে দলবল নিয়ে ভাড়া তুলতে যান খাঞ্জাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মতলেব মাতুব্বর। কিন্তু ব্যবসায়ীরা ভাড়া না দেওয়ায় ওই দিন রাতে ব্যবসায়ীদের ডেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভাড়া দিতে বলেন তিনি। অন্যথায় মার্কেটে পুনরায় তালা দেওয়ার হুমকি দেন। এই সময় শেষ হয় গতকাল সন্ধ্যায়। এর মধ্যে ব্যবসায়ীরা ভাড়া না দেওয়ায় গতকাল সন্ধ্যার পরে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মতলেব মাতুব্বর, সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা সেরনিয়াবাদ, বাকাই বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও গৌরনদী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য প্রদীপ কুমার দে এবং আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা মার্কেটে যান। তারা ভাড়া পরিশোধের জন্য ব্যবসায়ীদের আজকের মধ্যে ভাড়া না দিলে ভয়াবহ পরিণতি বরণ করার হুমকি দেন।
তবে মহড়া ও হুমকি দেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন মো. মতলেব মাতুব্বর। তিনি বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা সাদা কাগজে স্বাক্ষর করে আমার কাছে ভাড়া দেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন। সেহেতু ভাড়া আমার কাছেই দিতে হবে। বিষয়টি ব্যবসায়ীদের বোঝানোর পরে আমার কাছে ভাড়া দিতে তাঁরা স্বেচ্ছায় সম্মত হয়েছেন।’
মার্কেটের মালিক বিএনপি কর্মী আক্কেল আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘মতলেব মাতুব্বরের দেওয়া আলটিমেটাম অনুযায়ী ভাড়ার টাকা না পাওয়ায় গতকাল সন্ধ্যার পর তাঁরা মার্কেটে গিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছেন। তাঁরা ব্যবসায়ীদের গালিগালাজসহ ভাড়া পরিশোধে বাধ্য করতে ভয়ভীতি দেখিয়েছেন। এতে ব্যবসায়ীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এবং অনেকেই আজকে মতলেবকে ভাড়া দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ব্যবসায়ীরা তাঁদের অসহায়ত্বের কথা আমাকে জানিয়েছেন। আমি সরাসরি বলে দিয়েছি, মার্কেটের মালিক আমি। সুতরাং ভাড়া আমাকেই দিতে হবে।’