মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় দেশসেরা জাহাঙ্গীর, গ্রামে ফিরে শুভেচ্ছায় ভাসছেন

সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলে ৯১ দশমিক ২৫ নম্বর পেয়ে দেশসেরা হয়েছেন নরসিংদীর বেলাব উপজেলার জাহাঙ্গীর আলমছবি: সংগৃহীত

সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলে ৯১ দশমিক ২৫ নম্বর পেয়ে দেশসেরা হয়েছেন নরসিংদীর বেলাব উপজেলার জাহাঙ্গীর আলম।

গতকাল বিকেলে ফলাফল ঘোষণার পর থেকেই শুভেচ্ছা জানাতে তাঁর গ্রামের বাড়িতে ভিড় করছেন শুভাকাঙ্ক্ষীরা। তিনি ঢাকা থেকে আজ সোমবার সকালে বাড়িতে পৌঁছেছেন।

জাহাঙ্গীর আলম বেলাব উপজেলা নারায়ণপুর ইউনিয়নের খামারেরচর গ্রামের কৃষক মিজানুর রহমান ও গৃহবধূ ফেরদৌসা বেগম দম্পতির ছেলে। তিন ভাই–বোনের মধ্যে জাহাঙ্গীর আলম বড়। অন্য দুই বোন স্থানীয় বিদ্যালয়ের নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

জাহাঙ্গীর আলম ২০২৩ সালে স্থানীয় বারৈচা রেসিডেনশিয়াল মডেল স্কুল থেকে এসএসসি এবং চলতি বছর রাজধানীর সরকারি বিজ্ঞান কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। তিনি দুই পরীক্ষাতেই জিপিএ-৫ পেয়েছেন। কলেজে ভর্তির শুরু থেকেই প্রশ্ন ব্যাংক কিনে তিনি মেডিকেলে ভর্তির প্রস্তুতি শুরু করেছিলেন। ঢাকার ফার্মগেটের তেজকুনিপাড়ার একটি বাসায় সাবলেট থেকে তিনি মেডিকেল ভর্তি কোচিং করেন।

পরিবারের সদস্য ও শিক্ষকেরা জানান, জাহাঙ্গীর ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় বেশ মনোযোগী। অভিভাবক ও শিক্ষকদের সঠিক দিকনির্দেশনা এবং তাঁর নিরলস পরিশ্রমই এই সাফল্যের ভিত্তি। তাঁর এই সাফল্যে এলাকাবাসী ও শিক্ষানুরাগীদের মাঝে বইছে আনন্দের বন্যা।

ফলাফল ঘোষণার পর গতকাল রাতে মাইক্রোবাস ভাড়া করে জাহাঙ্গীরকে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যান পরিবারের সদস্যরা। আজ ভোরে বাড়ি ফেরার পর থেকেই নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ তাঁকে শুভেচ্ছা জানাতে যান। নিজ বিদ্যালয় থেকে আজ তাঁকে সংবর্ধনা দেওয়ার কথা আছে।

খবরটি শুনে গর্বে বুকটা ভরে উঠেছে জানিয়ে জাহাঙ্গীরের বাবা মিজানুর রহমান বলেন, ‘গতকাল রাত সাড়ে ১০টার একটি মাইক্রোবাস নিয়ে রাজধানীতে রওনা হই। এরপর আজ ভোরে জাহাঙ্গীরকে নিয়ে বাড়ি আসি। দূরদূরান্তের শত শত মানুষ তাঁকে একনজর দেখতে আসছেন, দোয়া করছেন। বাবা হিসেবে এর চেয়ে খুশির আর কী থাকতে পারে?’

বারৈচা রেসিডেনশিয়াল মডেল স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘আমি চাই ভবিষ্যতে একজন সফল ও মানবিক চিকিৎসক হয়ে আরও গৌরবান্বিত করবে। পাশাপাশি মানবিক গুণাবলি দিয়ে সে সমাজ ও মানুষের কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত রাখবে।’

ছোটবেলা থেকেই চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্নের কথা জানান জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বলেন, ‘এ সাফল্যের জন্য আমার মা-বাবার অবদান সবচেয়ে বেশি। তাঁদের মুখে হাসি ফোটাতে পেরেছি, এটাই আনন্দ। সকাল থেকে কত মানুষ বাড়িতে এসে, মুঠোফোনে কল করে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন, দোয়া করছেন। আমি খুবই খুশি।’