লক্ষ্মীপুরে বিএনপি নেতার ঘরে আগুনের ঘটনায় ৪ দিন পর মামলা
লক্ষ্মীপুরে বিএনপি নেতা বেলাল হোসেনের ঘরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মামলা হয়েছে। এতে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে সদর থানায় এ মামলা করেন বেলাল হোসেন। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার চার দিন পর এ মামলা হয়।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওয়াহেদ পারভেজ। জানতে চাইলে আজ বুধবার সকালে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘটনার পর থেকেই বেলাল হোসেনকে মামলা দায়েরের জন্য বলা হচ্ছিল। গতকাল রাতে তিনি বাদী হয়ে মামলা করেছেন। ঘটনাটি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।’
বেলাল হোসেন লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের চরমনসা গ্রামের সূতারগোপ্তা এলাকার বাসিন্দা। তিনি ওই ইউনিয়ন বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক। গত শুক্রবার গভীর রাতে তাঁর বাড়িতে আগুন লাগে। তাঁর দাবি, দরজায় বাইরে থেকে তালা লাগিয়ে ও পেট্রল ঢেলে ঘরে আগুন দেওয়া হয়েছে। আগুনে পুড়ে বেলালের সাত বছর বয়সী মেয়ে আয়েশা আক্তারের মৃত্যু হয়।
এ ছাড়া একই ঘটনায় বেলাল ও তাঁর দুই মেয়ে বীথি আক্তার (১৪) ও সালমা আক্তার স্মৃতি (১৭) দগ্ধ হন। এর মধ্যে বীথি ও স্মৃতি জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন আর বেলাল জেলার সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, স্মৃতি আক্তারের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
অগ্নিকাণ্ডের এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর সারা দেশে প্রতিবাদ হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও অনেকেই ক্ষোভ জানান। এর মধ্যে শনিবার আগুনের ঘটনায় নাশকতার কোনো ‘বিশ্বাসযোগ্য’ আলামত পায়নি বলে দাবি করে পুলিশ। যদিও সোমবার ঘটনাস্থলে তল্লাশি চালিয়ে তিনটি তালা উদ্ধার করে পুলিশের একটি দল।
গত রোববার রাতে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, অগ্নিকাণ্ডে বেলাল হোসেনের টিনের ঘরটি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। চারপাশে ছড়িয়ে আছে পোড়া টিন, কাঠ আর গৃহস্থালির জিনিসপত্রের অবশিষ্টাংশ। যেখানে একসময় পরিবারের থাকার জায়গা ছিল, সেখানে এখন শুধুই ছাই আর পোড়া গন্ধ। পুরো ঘরের কাঠামো ভেঙে পড়লেও দাঁড়িয়ে আছে কেবল কয়েকটি পিলার।
এ দিকে রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঘটনাস্থলে যান বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। এর আগে ৯টার দিকে দগ্ধ বিএনপি নেতা বেলাল হোসেনকে দেখতে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে যান তিনি। এ সময় তিনি বেলালের হাতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সহায়তা হিসেবে চার লাখ টাকা তুলে দেন। রুহুল কবির রিজভীর সঙ্গে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানিসহ দলের একাধিক নেতা উপস্থিত ছিলেন।