রেজাউল করিম নারায়ণগঞ্জের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। মানিকগঞ্জের জাফরগঞ্জে নিজের বাড়িতে কোরবানি শেষ করে গতকাল বৃহস্পতিবার ঈদের দিন শ্বশুরবাড়ি যেতে পারেননি। তাই আজ শুক্রবার সকালে মাংসের বস্তা নিয়ে মাগুরায় শ্বশুরবাড়ির উদ্দেশে রওনা হন তিনি।
আজ সকাল থেকে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথে ফেরি ও লঞ্চে এ রকম যাত্রীর সংখ্যাই বেশি। কোরবানির মাংস নিয়ে প্রিয়জনের কাছে যাচ্ছেন তাঁরা।
আজ সকালে দৌলতদিয়া লঞ্চঘাটে দেখা যায়, পাটুরিয়া থেকে ছেড়ে আসা প্রতিটি লঞ্চে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক যাত্রী। দৌলতদিয়া থেকে ছেড়ে যাওয়া লঞ্চগুলোতেও একই অবস্থা। ভিড় সামাল দিতে সকাল থেকে দৌলতদিয়া ঘাটে পুলিশের পাশাপাশি আনসার সদস্য, ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা অবস্থান করছেন।
দায়িত্বপ্রাপ্ত আনসার কমান্ডার এমদাদুল হক মিলন বলেন, ‘আমাদের ৪৫ জন সদস্য। এই মুহূর্তে আমাদের ১৫ জন সদস্য নিয়োজিত আছেন। যাত্রীদের ওঠানামাসহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখতে আমরা কাজ করছি। সকাল থেকেই লঞ্চঘাটে যাত্রীদের ভিড়। রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলার শত শত মানুষ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের দিকে গ্রামের বাড়ি, আত্মীয়স্বজনের বাড়ি ছুটছেন। যে কারণে পাটুরিয়া থেকে আসা প্রতিটি লঞ্চে ভিড় আছে।’
রাজবাড়ীর আহ্লাদীপুর থেকে মানিকগঞ্জের আড়ুয়ায় নানাবাড়ি বেড়াতে যাচ্ছেন বস্ত্র প্রকৌশলী রাকিবুল হক। ঘাটে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘তিন বছর আগে নানা মারা গেছেন, আছেন শুধু নানি। তিনিও অসুস্থ। বাড়িতে কোরবানির ঝামেলা থাকায় ঈদের দিন যেতে পারিনি। তাই ব্যাগে কিছু মাংস নিয়ে নানাবাড়ি বেড়াতে যাচ্ছি।’
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন বলেন, ‘আজ ফেরি থেকে লঞ্চে মানুষের ভিড় বেশি দেখা যাচ্ছে। এখনো রাজধানী বা আশপাশের এলাকার মানুষজন দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের দিকে যাচ্ছেন। এক-দুই দিন পর থেকে ঈদ করতে বাড়িতে আসা মানুষ কর্মস্থলের দিকে ছুটবেন। তখন হয়তো দৌলতদিয়া লঞ্চ ও ফেরিঘাটে চাপ পড়বে। তবে আমরা যানবাহন ও যাত্রী পারাপারে প্রস্তুত আছি।’