দক্ষিণাঞ্চলের সাত নৌপথে যাত্রীদের চাপ বেশি

আজ ভোর পাঁচটা থেকে বেলা তিনটা পর্যন্ত সদরঘাট টার্মিনালে থেকে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন পথে ছেড়ে গেছে ৩৪টি লঞ্চছবি: প্রথম আলো

পবিত্র ঈদুল ফিতর সামনে রেখে ঢাকা নদীবন্দর থেকে দক্ষিণাঞ্চলের সাতটি নৌপথে যাত্রীদের চাপ বেড়েছে। আজ রোববার সকাল থেকে বরগুনা, খেপুপাড়া, কালাইয়া, পটুয়াখালী, আমতলী, ইলিশা ও ভোলা রুটে যাত্রীদের চাপ বেশি ছিল। এসব রুটের লঞ্চগুলোর ডেক টার্মিনাল ছেড়ে যাওয়ার নির্ধারিত সময়ের ৬–৭ ঘণ্টা আগেই যাত্রীতে পরিপূর্ণ হয়ে যায়।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের ঢাকা নদীবন্দর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আজ ভোর পাঁচটা থেকে বেলা তিনটা পর্যন্ত সদরঘাট টার্মিনালে লঞ্চ এসেছে ৪৯টি। সদরঘাট থেকে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন পথে ছেড়ে গেছে ৩৪টি লঞ্চ।

আজ রোববার দুপুরে ঢাকা নদীবন্দর সদরঘাট টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, দক্ষিণাঞ্চলের বরগুনা, খেপুপাড়া, কালাইয়া, পটুয়াখালী, আমতলী, ইলিশা ও ভোলাগামী লঞ্চগুলোর ডেক যাত্রীতে পূর্ণ হয়ে গেছে। যাত্রীরা মুঠোফোনে গেমস খেলে ও একে অপরের সঙ্গে আলাপচারিতা করে সময় কাটাচ্ছেন। অন্যান্য পথের লঞ্চগুলোতে যাত্রীদের তেমন ভিড় নেই।

আরও পড়ুন

কালাইয়াগামী এমভি ঈগল-৫ লঞ্চের যাত্রী মাসুদ শিকদার বলেন, আজ ছুটির দিন থাকায় সড়কে তেমন যানজট ছিল না। লঞ্চ ছাড়বে সন্ধ্যা ছয়টায়। দুপুর ১২টার দিকে লঞ্চে উঠে দেখেন ডেক যাত্রীতে ভরে গেছে। ডেকের এক পাশে কোনোমতে চাদর বিছিয়ে স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েকে নিয়ে বসেছেন।

অবশ্য পদ্মা সেতুর কারণে আগের চেয়ে যাত্রী কমেছে বলে জানিয়েছেন লঞ্চসংশ্লিষ্টরা। ঝালকাঠিগামী এমভি সুন্দরবন-১২ লঞ্চের কর্মচারী আবদুল আজিজ বলেন, ‘আগের দিন আর অহন নাই। আগে এ টাইমে যাত্রীরা আমগো ঠেলা ধাক্কা দিয়া লঞ্চে উঠত। পদ্মা সেতু হওয়ার পর আর অহন যাত্রীরা ঠেলা দিব তো দূরের কথা, আমরাই যাত্রী খুঁইজ্যা পাই না।’

আরও পড়ুন

ভিড় কিছুটা কম হওয়ায় যাত্রীরাও স্বস্তির কথা জানিয়েছেন। লালমোহনগামী গ্লোরি অব শ্রীনগর লঞ্চের যাত্রী মমতা বেগম বলেন, ‘আগে এ সময়ে লঞ্চে উঠতে অনেক বেগ পেতে হতো। মানুষের ভিড়ের কারণে টার্মিনাল দিয়ে হাঁটা যেত না। কিন্তু এখন তেমন ভিড় নেই।’

ইলিশাগামী এমভি কর্ণফুলী-৪ লঞ্চের যাত্রী সোলায়মান মিয়া বলেন, ‘পদ্মা সেতু দিয়ে বাসযোগে বাড়ি গেলে খরচ বেশি পড়ে। কিন্তু নদীপথে গেলে কম খরচে যাওয়া যায়। তাই খরচ বাঁচাতে লঞ্চে যাচ্ছি।’

এমভি পূবালী লঞ্চের মালিক আবদুল খালেক বলেন, পটুয়াখালী ও পায়রা বন্দরের পথে তাঁর দুটি লঞ্চ ছেড়ে যাবে। তবে যাত্রী তেমন নেই। কাল (সোমবার) গার্মেন্টস ছুটি হলে যাত্রীর চাপ কিছুটা বাড়তে পারে।

বিআইডব্লিউটিএর নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগ ঢাকা নদীবন্দরের যুগ্ম পরিচালক ইসমাইল হোসেন বলেন, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে ঢাকা নদীবন্দরে ১ নম্বর সতর্কসংকেত রয়েছে। এ অবস্থায় আবহাওয়া অধিদপ্তরেরর নির্দেশ মেনে লঞ্চ চালানোর জন্য লঞ্চের চালকদের সতর্ক করা হচ্ছে।

ইসমাইল হোসেন আরও বলেন, কোনো অবস্থাতেই লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী বহন করা যাবে না। এ বিষয়ে সার্বক্ষণিক টার্মিনাল এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে। এ ছাড়া যাত্রীদের যাত্রা নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ করার জন্য বিআইডব্লিউটিএ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কাজ করছেন।