কক্সবাজারে লাখো পর্যটক, থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে কঠোর বিধিনিষেধ
বছরের শেষ দিনে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে ভিড় করেছেন লাখো পর্যটক। সৈকতে গোসল, বিকেলে সূর্যাস্ত দেখা এবং জেলার বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্র ঘুরে সময় কাটাচ্ছেন তাঁরা। তবে বর্ষবিদায় উপলক্ষে আজ বুধবার রাতে সমুদ্রসৈকতসহ উন্মুক্ত স্থানে কোনো ধরনের অনুষ্ঠান না করতে কঠোর বিধিনিষেধ দিয়েছে পুলিশ।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ বিধিনিষেধ দেয় জেলা পুলিশ। নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খল পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এ বিধিনিষেধ দেওয়া হয়েছে বলে পুলিশের বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়। তবে তারকা মানের কয়েকটি হোটেল ও রিসোর্টে নিজস্ব অতিথিদের জন্য সাংস্কৃতিক আয়োজন থাকবে। এতে বাইরের অতিথিদের অংশগ্রহণ সীমিত রাখা হয়েছে।
হোটেলমালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ সৈকতে অন্তত ১ লাখ ২০ হাজার পর্যটকের সমাগম হতে পারে। নিরাপত্তার কারণে গত আট বছরের মতো এ বছরও সৈকতে বর্ষবিদায় অনুষ্ঠান হচ্ছে না। এ ছাড়া গতকাল সকালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মৃত্যুর খবরেও শোকের আবহ তৈরি হয়েছে। গতকাল তাঁর মৃত্যুতে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালনের ঘোষণা দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। ঘোষণা অনুযায়ী আজ সাধারণ ছুটি।
বর্তমানে কক্সবাজার শহরের পাঁচ শতাধিক হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট, গেস্টহাউস ও কটেজের প্রায় ৯০ শতাংশ কক্ষ পর্যটকে ভরা। হোটেলগুলোর দৈনিক ধারণক্ষমতা প্রায় ১ লাখ ৬৭ হাজার। পর্যটনসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২৫ ডিসেম্বর থেকে ৩০ ডিসেম্বর—এই ছয় দিনে অন্তত সাত লাখ পর্যটক কক্সবাজার ভ্রমণ করেছেন।
কক্সবাজার হোটেল-গেস্টহাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, প্রতিবছর বিপুলসংখ্যক পর্যটক সৈকতে দাঁড়িয়ে সূর্যাস্ত দেখে পুরোনো বছরকে বিদায় জানান। তবে কয়েক দিন ধরে ঘন কুয়াশা থাকায় এবার সূর্যাস্ত দেখা যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। সৈকত ও উন্মুক্ত স্থানে কোনো আয়োজন না থাকলেও পর্যটকের আগমন থেমে নেই।
পুলিশের কঠোর বিধিনিষেধ
পুলিশের এ বিজ্ঞপ্তিতে থার্টি ফার্স্ট নাইটে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব, অপপ্রচার ও উসকানিমূলক বক্তব্য ছড়ানো, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট, নাশকতা বা সহিংস কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। এ ছাড়া উচ্চ শব্দে হর্ন বাজানো, বেপরোয়া গতিতে গাড়ি বা মোটরসাইকেল চালানো নিষিদ্ধ থাকবে।
জানতে চাইলে জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) অলক বিশ্বাস প্রথম আলোকে বলেন, থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে কক্সবাজার শহর ও সমুদ্রসৈকতে আতশবাজি ও পটকা বিক্রি ও ব্যবহার নিষিদ্ধ থাকবে। উন্মুক্ত স্থানে কিংবা রাস্তায় কোনো কনসার্ট, নাচ-গানের অনুষ্ঠান করা যাবে না। ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টা থেকে ১ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বার ও মদের দোকানে বেচাকেনা বন্ধ থাকবে।