চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় এক জেলেকে মারধরের ঘটনার পর এবার মামলা তুলে নিতে চাপ ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সদ্য বহিষ্কৃত যুবদল নেতা মাহবুব মিজির বিরুদ্ধে।
অভিযোগকারী জেলে ফুলচাঁন বর্মণ বলেন, গতকাল শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে মাহবুব মিজি লোকজন নিয়ে তাঁর বাড়িতে আসেন। তখন তিনি মামলা তুলে নিতে চাপ দেন এবং না মানলে ‘দেখে নেওয়ার’ হুমকি দেন। ফুলচাঁন আরও অভিযোগ করেন, ওই সময় তাঁকে জোর করে থানায় নেওয়ারও চেষ্টা করা হয়। পরে ছেংগারচর এলাকার এক বিএনপি নেতার ব্যক্তিগত কার্যালয়ে তাঁকে নিয়ে গিয়ে বিভিন্নভাবে মামলা প্রত্যাহারের জন্য চাপ দেওয়া হয়। তবে তিনি রাজি হননি। এ কারণে তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানান।
ফুলচাঁন প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার একটি খেলায় ওই নেতাকে দাওয়াত না দেওয়ার অভিযোগে আমাকে মারধর করা হয়। এরপর থানায় মামলা করি। এতে যুবদল নেতা মাহবুব মিজিসহ তিনজনকে আসামি করা হয়। মামলাটি তুলে নিতে ওই নেতা একাধিকবার চাপ ও হুমকি দিচ্ছেন।’
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে মাহবুব মিজি গতকাল রাতে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমি ওই জেলেকে মারধর করিনি। মামলা তুলতেও কোনো চাপ বা হুমকি দিইনি।’ তিনি বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের জন্য জেলা যুবদলের নেতাদের কাছে অনুরোধও জানান।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, শৃঙ্খলাভঙ্গ ও দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অভিযোগে গত শুক্রবার রাতে চাঁদপুর জেলা যুবদল মাহবুব মিজিকে বহিষ্কার করে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার বিকেলে ষাটনল এলাকায় মৎস্য বিভাগের উদ্যোগে একটি প্রীতি হাডুডু খেলা হয়। খেলায় ফুলচাঁন বর্মণ ও মহাবীর বর্মণের দুটি দল অংশ নেয়। খেলা শেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদা কুলসুম পুরস্কার বিতরণ করেন। অতিথিরা চলে যাওয়ার পর ষাটনল ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি মাহবুব মিজি ও সহসভাপতি সালাম মিজি ফুলচাঁনকে ডেকে পাশের একটি নির্জন স্থানে নিয়ে যান। দাওয়াত না দেওয়ার অভিযোগ তুলে তাঁকে কিল-ঘুষি ও লাঠি দিয়ে মারধর করেন এবং পকেট থেকে ১২ হাজার ৫০০ টাকা ছিনিয়ে নেন। ইমাম হোসেন খান নামের আরেকজনকেও মারধর করা হয়।
মতলব উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল হক বলেন, মামলাটির তদন্ত চলছে। মামলা তুলতে চাপ বা হুমকি দেওয়ার বিষয়টি পুলিশ জানে না। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।