আগামী সেপ্টেম্বরে ঢাকা-কক্সবাজার ট্রেন চলাচল করবে: রেলমন্ত্রী
রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, আগামী সেপ্টেম্বর মাসে ঢাকা-কক্সবাজার ট্রেন চলাচল করবে। সরকারের অগ্রাধিকারভিত্তিক ‘দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন’ প্রকল্পের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। ইতিমধ্যে প্রকল্পের ৮৪ শতাংশ শেষ হয়েছে। অবশিষ্ট কাজ সেপ্টেম্বর মাসের আগেই শেষ করা হবে।
আজ মঙ্গলবার সকালে কক্সবাজার শহরের ঝিলংজা ইউনিয়নের চান্দেরপাড়া এলাকায় নির্মাণাধীন আইকনিক রেলস্টেশন পরিদর্শনের পর সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। মন্ত্রী বলেন, পর্যটন রাজধানীখ্যাত কক্সবাজারের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খুবই আন্তরিক। তাঁর আগ্রহে সেখানে রেললাইন প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে।
সমুদ্রসৈকত থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে চান্দেরপাড়া এলাকার ২৯ একর জায়গায় ২২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ঝিনুকের আদলে দৃষ্টিনন্দন আইকনিক রেলস্টেশন নির্মাণ করা হচ্ছে। ১ লাখ ৮৭ হাজার বর্গফুট আয়তনের ছয়তলা ভবনের রেলস্টেশনে থাকা-খাওয়াসহ আধুনিক সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা রাখা হয়েছে। বর্তমানে ভবনের চারদিকে গ্লাস ফিটিংস ও চীন থেকে আনা স্টিলের ক্যানোফি স্থাপনের কাজ চলছে। কাজের অগ্রগতি ৮৬ শতাংশ জানিয়ে সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা জানান, আগামী সেপ্টেম্বর মাসের আগেই রেলস্টেশনের কাজ শেষ করা সম্ভব হবে।
নির্মাণাধীন রেলস্টেশনের কাজ দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম। এরপর তিনি সড়কপথে রামুতে নির্মাণাধীন রেলস্টেশন ও রেলপথ নির্মাণকাজ পরিদর্শন করেন। দুপুরে সেখান থেকে ঈদগাঁও, ডুলাহাজারা, চকরিয়ায় রেলপথের কাজ দেখতে যান তিনি। রেললাইন প্রকল্পের আওতায় কক্সবাজার থেকে দোহাজারী পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটারে রামু, ইসলামাবাদ, ডুলাহাজারা, চকরিয়া, হারবাং, লোহাগাড়া, সাতকানিয়া ও দোহাজারীতে পৃথক ৯টি রেলস্টেশন নির্মাণ করা হচ্ছে।
রেলমন্ত্রী বলেন, ‘চান্দেরপাড়ায় নির্মাণাধীন ঝিনুক আকৃতির আইকনিক রেলস্টেশনটি অনন্য স্থাপত্যশৈলী ও দৃষ্টিনন্দন। এর নির্মাণকাজ শেষ পর্যায়ে। এটি কেবল কক্সবাজারের গর্ব নয়, এটি বাংলাদেশেরও গর্ব।’
এ সময় মন্ত্রীর সঙ্গে দোহাজারী-কক্সবাজার রেলওয়ে প্রকল্পের পরিচালক মফিজুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, করোনা মহামারি ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে এই রেললাইন নির্মাণে নানামুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়েছে। সেসব চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করা সম্ভব হয়েছে। বিদেশ থেকে যেসব উপকরণ আনতে হয়, তা-ও মজুত আছে। এখন বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে রেল চলাচলের উপযোগী করা সম্ভব হবে।
প্রকল্প পরিচালক মফিজুর রহমান বলেন, ‘১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ১০০ কিলোমিটারের এই রেলপথ চালু হলে পর্যটনের নতুন দিগন্ত সূচিত হবে। কম খরচে বিলাসবহুল রেলে চড়ে পর্যটকেরা বিশ্বের দীর্ঘতম কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত দেখার সুযোগ পাবেন।’