বিভিন্ন সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করায় ছাত্রলীগ কর্মী আশরাফুলকে হত্যা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত ছাত্রলীগ কর্মী আশরাফুর রহমানছবি: সংগৃহীত

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জয়ী চেয়ারম্যান প্রার্থীর আনন্দমিছিলে গুলি চালিয়ে ছাত্রলীগ কর্মী আশরাফুল রহমানকে (২২) হত্যার ঘটনায় ‘অন্যতম হোতা’ হাসান আল ফারাবী ওরফে জয়কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

সংস্থাটি বলছে, ছাত্রলীগের বেশ কিছু সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করায় এবং এলাকায় এককভাবে প্রভাব বিস্তার করতে তাঁকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়। আজ শনিবার দুপুরে জেলার পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন।

এর আগে গতকাল শুক্রবার ভোরে নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার কুতুবপুর গ্রামের এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে হাসানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

আরও পড়ুন

লিখিত বক্তব্যে জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন বলেন, অন্যতম হোতা হাসানকে গ্রেপ্তারের পর হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্রটি উদ্ধারের জন্য তাঁকে নিয়ে কিশোরগঞ্জের ভৈরব, নরসিংদী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জসহ বেশ কয়েকটি জায়গায় অভিযান চালানো হয়। পরে গতকাল রাতে একটি সেতুসংলগ্ন ঝোপ থেকে অস্ত্রটি উদ্ধার করা হয়। আশরাফুলকে গুলি করে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন হাসান।

জালাল, হাসানসহ আরও বেশ কয়েকজন মিলে এলাকায় একক আধিপত্য বজায় রাখার জন্য আশরাফুল ও তাঁর সঙ্গীদের কয়েকজনকে শিক্ষা দেওয়ার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী জালাল হোসেন ২ জুন আরেক ব্যক্তির কাছ থেকে অস্ত্রটি সংগ্রহ করে হাসানকে দেন। এর পর থেকেই আশরাফুলকে মারার সুযোগ খুঁজতে থাকেন হাসান।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন

হাসান আল ফারাবীকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি জালাল হোসেন ওরফে ভিপি খোকা ও হাসান আল ফারাবী উভয়ই ঘনিষ্ঠ বন্ধু। ভুক্তভোগী আশরাফুল ওরফে ইজাজও তাঁদের সঙ্গে চলাফেরা করতেন। তাঁরা সবাই একই এলাকার কলেজপাড়ার বাসিন্দা। এলাকায় প্রভাব বিস্তার করতেন জালাল হোসেন ও হাসান। তবে তাঁদের অনেক সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করতেন আশরাফুল ও তাঁর সমর্থক বন্ধুরা। এ কারণে আশরাফুল ও তাঁর বন্ধুদের প্রতি ক্ষিপ্ত ছিলেন জালাল ও হাসান।

পুলিশের এই কর্মকর্তা যোগ করে বলেন, এই বিরোধ আস্তে আস্তে চরম আকার ধারণ করে। জালাল, হাসানসহ আরও বেশ কয়েকজন মিলে এলাকায় একক আধিপত্য বজায় রাখার জন্য আশরাফুল ও তাঁর সঙ্গীদের কয়েকজনকে শিক্ষা দেওয়ার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী জালাল হোসেন ২ জুন আরেক ব্যক্তির কাছ থেকে অস্ত্রটি সংগ্রহ করে হাসানকে দেন। এর পর থেকেই আশরাফুলকে মারার সুযোগ খুঁজতে থাকেন হাসান।

৫ জুন সন্ধ্যায় সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাচন শেষে জয়ী চেয়ারম্যান ও জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেনের বিজয় মিছিলে আশরাফুলকে প্রকাশ্যে গুলি করা হয়। আশরাফুল তাঁর পক্ষের লোক ছিলেন। গ্রেপ্তার হাসানও নির্বাচনে একই পক্ষে কাজ করেছেন।

এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার রাতে আশরাফুলের বাবা বাদী হয়ে ১৬ জনকে আসামি করে সদর থানায় একটি মামলা করেন। মামলার প্রধান আসামি জালাল হোসেন ওরফে খোকা। আসামি তালিকায় ২ নম্বরে আছেন বহিষ্কৃত ছাত্রলীগের নেতা হাসান আল ফারাবী।