মাওলানা আহমদের আমবয়ানে শুরু ইজতেমা, জুমার নামাজ পড়াবেন জুবায়ের

মুসল্লিদের পদচারণে মুখর ইজতেমা মাঠ। আজ শুক্রবার সকালে টঙ্গীর তুরাগতীরেছবি: প্রথম আলো

পাকিস্তান থেকে আসা মাওলানা আহমদ বাটলার আমবয়ানের মধ্য দিয়ে আজ শুক্রবার ফজরের নামাজের পর শুরু হয়েছে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগতীরের এ ইজতেমায় অংশ নিচ্ছেন দেশ-বিদেশের মুসল্লিরা। আগামী রোববার আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হবে প্রথম পর্বের ইজতেমা।

ইজতেমার গণমাধ্যম সমন্বয়ক মো. হাবিবুল্লাহ রায়হান প্রথম আলোকে বলেন, আজ ফজরের পর উর্দুতে আমবয়ানের মধ্য দিয়ে এবারের বিশ্ব ইজতেমার আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়। বয়ান করেন পাকিস্তানের মাওলানা আহমদ বাটলা। ইজতেমাস্থলের বয়ানমঞ্চ থেকে মূল বয়ান উর্দুতে হলেও বাংলাদেশের মাওলানা নুরুর রহমান তা বাংলায় তরজমা করেন। দুপুরে জুমার নামাজ পড়াবেন বাংলাদেশের মাওলানা জুবায়ের।

তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধের কারণে এবারও বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হচ্ছে আলাদাভাবে। প্রথম পর্বের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বাংলাদেশের মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীরা। ৪ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হবে এ পর্ব। দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমা হবে ৯ থেকে ১১ ফেব্রুয়ারি। এ পর্বের নেতৃত্ব দেবেন ভারতের মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা।

ইজতেমা মাঠে অবস্থানরত মুসল্লিরা। আজ শুক্রবার সকালে
ছবি: প্রথম আলো

ইজতেমায় অংশ নিতে গত মঙ্গলবার থেকেই মুসল্লিরা আসতে শুরু করেন। সবচেয়ে বেশি মুসল্লি আসেন গতকাল বৃহস্পতিবার। বিকেলের মধ্যে ভরে যায় ইজতেমা মাঠ। আজ শুক্রবার ইজতেমার জামাতের সঙ্গে জুমার নামাজ পড়তে রাজধানী ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকার মুসল্লিরা দলে দলে আসছেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার বৃষ্টিতে বেকায়দায় পড়েছিলেন মাঠে অবস্থান নেওয়া মুসিল্লরা। শামিয়ানা চুয়ে পানি পড়ে সঙ্গে থাকা জিনিসপত্র ভিজে যায়। আজ সকাল আটটার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, আকাশ বেশ পরিষ্কার। মাঘের সকালের শীত উপেক্ষা করে মুসল্লিরা ইজতেমা মাঠের দিকে আসছেন। কেউ চাদর মুড়ি দিয়ে, কেউ গরম কাপড় পরে।

আরও পড়ুন

সফলভাবে ইজতেমা সম্পন্ন করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে গাজীপুরের প্রশাসন। মুসল্লিদের নিরাপত্তায় কাজ করছেন র‌্যাব, পুলিশ, সাদাপোশাকের পুলিশ, বিজিবিসহ আনসার সদস্যরা। এর বাইরে পুরো ইজতেমা ময়দানকে সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। সঙ্গে প্রস্তুত রাখা হয়েছে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত।

কেউ কোনো বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করলে কঠোরভাবে দমন করা হবে উল্লেখ করে গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. মাহবুব আলম বলেন, মুসল্লিদের নিরাপত্তার স্বার্থে ইজতেমা মাঠ ও আশপাশের এলাকায় প্রায় ছয় হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন রয়েছেন। তাঁরা সার্বক্ষণিক মুসল্লিদের নিরাপত্তায় কাজ করছেন।

ইজতেমা আয়োজকদের শীর্ষস্থানীয় মুরুব্বি খন্দকার মেজবাহ উদ্দিন বলেন, ‘প্রতিবারের মতো এবারও আমাদের কয়েক লাখ মুসল্লি ইজতেমায় এসেছেন। মাঠে জায়গা না পেয়ে আশপাশের সড়ক-মহাসড়ক, বাসাবাড়িতে অবস্থান করছেন। আখেরি মোনাজাতের দিন আরও বেশি লোকের সমাগম হবে বলে আশা করছি।’

আরও পড়ুন

খন্দকার মেজবাহ উদ্দিন জানান, শুক্রবার ফজরের পর আমবয়ানের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ইজতেমা শুরু হয়। তবে মুসল্লি বেশি থাকার কারণে গতকাল থেকেই বয়ান চলতে থাকে। আগামী রোববার আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হবে প্রথম পর্বের ইজতেমা।

আরও ১ মুসল্লির মৃত্যু

ইজতেমায় অংশ নিতে আসা এখলাস মিয়া (৭০) নামের আরও এক মুসল্লির মৃত্যু হয়েছে। এখলাস মিয়ার বাড়ি নেত্রকোনা জেলায়। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা যান বলে জানান ইজতেমা আয়োজকেরা।
এ নিয়ে গত বুধবার থেকে ইজতেমায় আসা ৪ মুসল্লির মৃত্যু হলো। অন্য তিনজন হলেন আবদুস সাত্তার (৭২), মো. জামাল উদ্দিন (৪০) ও ইউনুস (৬০)।

আরও পড়ুন