জাকসুর ভিপি প্রার্থী অমর্ত্যর প্রার্থিতা বাতিল প্রসঙ্গে প্রশাসনের ব্যাখ্যা
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা অধ্যাদেশ ২০০৩ অনুযায়ী অনিয়মিত পরীক্ষার্থী হওয়ায় প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী অমর্ত্য রায়কে জাকসু নির্বাচনে ভোটার ও প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। এ কারণে তাঁকে ভোটার ও প্রার্থী তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
আজ সোমবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অমর্ত্য রায় ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক প্রথম বর্ষে ভর্তি হন। তিনি ২০২১ সালের স্নাতক চূড়ান্ত পরীক্ষায় ৪০৭ ও ৪০৮ নম্বর কোর্সে অকৃতকার্য হন। অকৃতকার্য হওয়া দুটি কোর্সে প্রথমবার ২০২২ সালে অনুষ্ঠিত চতুর্থ পর্ব স্নাতক চূড়ান্ত পরীক্ষায় মানোন্নয়ন পরীক্ষা দেওয়ার জন্য আবেদন করেন। অনুমতি পেয়ে তিনি ওই দুটি কোর্সে মানোন্নয়ন পরীক্ষা দেন। তবে তিনি আবারও উভয় কোর্সে অকৃতকার্য হন। ওই পরীক্ষা ২০২৪ সালের ২৯ মে শুরু হয় এবং ৯ জুন শেষ হয়। তিনি অকৃতকার্য দুটি কোর্সে দ্বিতীয়বার ২০২৩ সালে অনুষ্ঠিত চতুর্থ পর্ব স্নাতক চূড়ান্ত পরীক্ষায় মানোন্নয়ন পরীক্ষা দেওয়ার আবেদন করেন। প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে তৃতীয়বার (অর্থাৎ দ্বিতীয় বার মানোন্নয়ন) পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ৪০৭ নম্বর কোর্সে কৃতকার্য ও ৪০৮ নম্বর কোর্সে অকৃতকার্য হন। ওই পরীক্ষা ২০২৫ সালের ১২ মে শুরু হয়ে ১৮ মে শেষ হয়।
পরীক্ষা অধ্যাদেশ অনুযায়ী, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের আগে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা কোনো কোর্সে একবারই মানোন্নয়ন পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পান। কিন্তু অমর্ত্য রায় দ্বিতীয়বার মানোন্নয়ন পরীক্ষা দিয়েছেন, যা বিধিবহির্ভূত। তবে শিক্ষা পর্ষদ মানবিক কারণে তাঁর দ্বিতীয় মানোন্নয়ন পরীক্ষাকে বিশেষ পরীক্ষা হিসেবে গণ্য করার সুপারিশ করে। গত ৪ সেপ্টেম্বর সিন্ডিকেট সভায় সেটি অনুমোদন দেওয়া হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি অমর্ত্য রায়কে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়। পরে তিনি বহিষ্কারাদেশ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্ট বিভাগে রিট করেন। আদালত একই বছরের ২১ মার্চ তাঁকে পরীক্ষা গ্রহণের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশ অনুসারে অমর্ত্য রায়ের ৪০৭ ও ৪০৮ নং কোর্সের প্রথম মানোন্নয়ন পরীক্ষা নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের করা আশুলিয়া থানার মামলায় জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তাঁকে অব্যাহতি দেয়। পরে রায়সহ অমর্ত্য তাঁর বিরুদ্ধে দেওয়া বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের জন্য আবেদন করেন। ওই আবেদন বিবেচনায় নিয়ে ২০২৪ সালে ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের বিশেষ সভায় মানবিক বিবেচনায় নিয়ে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়।
এর আগে ৬ সেপ্টেম্বর প্রগতিশীল শিক্ষার্থীদের একাংশের প্যানেল সম্প্রীতির ঐক্য প্যানেলের সহসভাপতি (ভিপি) প্রার্থী অমর্ত্য রায়ের প্রার্থিতা বাতিল করে নির্বাচন কমিশন। পরদিন সংবাদ সম্মেলন করে কমিশনের এ সিদ্ধান্তকে অবৈধ ও নিয়মবহির্ভূত দাবি করেছে প্রগতিশীল শিক্ষার্থীদের প্যানেল ‘সম্প্রীতির ঐক্য’।