ছাতকে সুরমার পানি বিপৎসীমার ওপরে, সড়ক প্লাবিত হওয়ায় ভোগান্তি

সুনামগঞ্জে পাহাড়ি ঢলের পানিতে প্লাবিত তাহিরপুর-বিশ্বম্ভরপুর সড়ক। আজ বিকেলে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার শক্তিয়ারখলা এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

সুনামগঞ্জে বৃষ্টি ও উজানের পাহাড়ি ঢলে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। জেলার ছাতক উপজেলায় সুরমাসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এই উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার শক্তিয়ারখলা এলাকায় সুনামগঞ্জ-তাহিরপুর সড়ক পাহাড়ি ঢলের পানিতে প্লাবিত হওয়ায় যাতায়াতের ক্ষেত্রে মানুষ ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। এখানে সরাসরি যান চলাচল করতে পারছে না।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্যমতে, সুনামগঞ্জ পৌর শহরের ষোলঘর পয়েন্টে আজ সোমবার সন্ধ্যা ছয়টায় নদীর পানির উচ্চতা ছিল ৭ দশমিক ৫৫ মিটার। এখানে সুরমা নদীর পানির বিপৎসীমা ৭ দশমিক ৮০ মিটার। এ হিসাবে নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার নিচে আছে। তবে ১২ ঘণ্টায় এখানে পানি বেড়েছে ৭ সেন্টিমিটার। সুনামগঞ্জে রোববার রাতে বৃষ্টি হয়েছে ৫৩ মিলিমিটার।

আরও পড়ুন

ছাতকের সুরমা নদীর পানি আজ সকাল ৯টায় বিপৎসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার ওপরে ছিল। সন্ধ্যা ছয়টায় সেটা বেড়ে বিপৎসীমার ৭৭ সেন্টিমিটার ওপরে রয়েছে। একই উপজেলার চেলা নদীর পানি বিপৎসীমার ৮২ সেন্টিমিটার ওপরে এবং পিয়াইন নদের পানি বিপৎসীমার ৯০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এই উপজেলার সীমান্তবর্তী ইসলামপুর, নোয়ারাইসহ কয়েকটি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। গ্রামীণ রাস্তাঘাট প্লাবিত হওয়ায় মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন। উজান থেকে পাহাড়ি ঢল নামায় পানি বাড়ছে।

ছাতক উপজেলা শহরের বাসিন্দা হারুনুর রশিদ জানান, রোববার রাত থেকে বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢল নামছে। এতে পানি বাড়ছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।

আরও পড়ুন
তাহিরপুর-বিশ্বম্ভরপুর সড়ক প্লাবিত হওয়ায় যাতায়াতে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন লোকজন। আজ বিকেলে সুনামগঞ্জেের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার শক্তিয়ারখলা এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) গোলাম মোস্তফা মুন্না আজ সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে জানান, তিনি উপজেলার নোয়ারাই ইউনিয়ন ঘুরে এসেছেন। গ্রামীণ রাস্তাঘাটে পানি আছে। তবে এখনো মানুষের বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করেনি। আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে এসব আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষ যেতে পারবেন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদেরও সেভাবে নির্দেশনা দেওয়া আছে।

এদিকে সুনামগঞ্জ-তাহিরপুর সড়কের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার শক্তিয়ারখলা এলাকায় সড়কের বেশ কিছু অংশ ঢলের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। ওই অংশটুকু নিচু হওয়ায় পাহাড়ি ঢল নামলেই প্লাবিত হয়ে যায়। এতে তাহিরপুরের সঙ্গে সরাসরি যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে।

আরও পড়ুন

তাহিরপুরের ইউএনও সালমা পারভীন বলেন, ‘শক্তিয়ারখলা এলাকায় সড়ক প্লাবিত হয়েছে বলে শুনেছি। উজানের ঢল না নামলে সড়ক থেকে পানি সরে যাবে।’

সুনামগঞ্জ পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মামুন হাওলাদার বলেন, সুনামগঞ্জে সোমবার দিনে বৃষ্টি হয়েছে কম। তবে উজান থেকে পাহাড়ি ঢল নামার কারণেই জেলার নদ-নদীর পানি আবার বাড়ছে। তবে সুনামগঞ্জে বড় বন্যার আশঙ্কা নেই।

আরও পড়ুন