নির্বাচন কর্মকর্তাকে সিইসির ফোন, হিরো আলমের অভিযোগ খতিয়ে দেখার নির্দেশ

সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল ও আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলম

বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনের উপনির্বাচনে একতারা প্রতীকের আলোচিত স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলমের ফল পাল্টানোর অভিযোগ খতিয়ে দেখতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। আজ বৃহস্পতিবার সিইসি টেলিফোনে বগুড়া জেলা জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কর্মকর্তা এবং সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মাহমুদ হাসানকে এ নির্দেশ দেন।

সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মাহমুদ হাসান প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বগুড়া-৪ আসনে উপনির্বাচনে ১০ কেন্দ্রে ফলাফল পাল্টানোর অভিযোগ তুলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলম গণমাধ্যমে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা নজরে আসার পর সিইসি ফোন করে বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশ পাওয়ার পর নন্দীগ্রাম উপজেলার সব কটি ভোটকেন্দ্রে ইভিএম মেশিনে প্রাপ্ত ফলাফল পুনর্যাচাই করা হয়েছে। ঘোষিত ফলাফলের সঙ্গে ইভিএম মেশিনে পড়া ভোটের হিসাব শতভাগ নির্ভুল আছে। প্রয়োজনে হিরো আলম কেন্দ্রভিত্তিক ফলাফল নিয়ে যাচাই করতে পারেন।

আরও পড়ুন

গতকাল বুধবার বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনের উপনির্বাচনে মহাজোটের প্রার্থী এ কে এম রেজাউল করিম তানসেনের কাছে মাত্র ৮৩৪ ভোটের ব্যবধানে হেরে গেছেন হিরো আলম। বেসরকারিভাবে ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী, কাহালু ও নন্দীগ্রাম উপজেলার মোট ১১২টি কেন্দ্রে মোট বৈধ ভোট পড়েছে ৭৮ হাজার ৫২৪টি। এর মধ্যে ২০ হাজার ৪০৫ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে জয়ী হয়েছেন এ কে এম রেজাউল করিম তানসেন (মশাল)। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আশরাফুল হোসেন (একতারা) পেয়েছেন ১৯ হাজার ৫৭১ ভোট।

আরও পড়ুন

নির্বাচনের ফলাফল পাল্টানোর অভিযোগ তুলে হিরো আলম গতকাল রাত সাড়ে ১০টায় বগুড়া শহরতলির এরুলিয়ায় নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে তিনি ভোটের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে বলেন, ভোট চুরি হয়নি, ফলাফল ছিনতাই হয়েছে। ন্যায়বিচার পেতে উচ্চ আদালতে যাওয়ার কথাও বলছেন তিনি।

উপনির্বাচনে ফল ঘোষণার পর সংবাদ সম্মেলন করেন হিরো আলম। বুধবার রাত সাড়ে দশটায় বগুড়া শহরতলীর এরুলিয়ায়
ছবি: প্রথম আলো

সংবাদ সম্মেলনে হিরো আলম অভিযোগ করেন, ভোট গ্রহণের পর নন্দীগ্রাম উপজেলা প্রশাসনে স্থাপিত নির্বাচন কমিশনের অস্থায়ী নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে যখন ফলাফল ঘোষণা চলছিল, তখন ৪৯টি কেন্দ্রের মধ্যে ১ থেকে ৩৯টি কেন্দ্রের ফলাফল কেন্দ্রভিত্তিক ঘোষণা করা হয়। এরপর ফলাফল ঘোষণায় বিরতি দেওয়া হয়। কিছু সময় পর ১০ কেন্দ্রের ফল কেন্দ্রভিত্তিক ঘোষণা না করেই জাসদের প্রার্থী এ কে এম রেজাউল করিম তানসেনকে হঠাৎ বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।

এ বিষয়ে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মাহমুদ হাসান বলেন, ‘অভিযোগ তো করলেই হবে না, তা প্রমাণ থাকতে হবে। তাঁর কাছে কী প্রমাণ আছে? আদালতে কেউ রিট করতেই পারেন, তবে তা প্রমাণ করতে হবে।’

আরও পড়ুন

ঘোষিত ফলাফল নির্ভুল দাবি করে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেন, ‘তিনি (হিরো আলম) কাহালু উপজেলার ফলাফল নিয়ে কিছু বলছেন না কেন? কারণ, সেখানে তিনি বিজয়ী হয়েছেন। নন্দীগ্রামে ভোট কম পাওয়ায় তিনি ফলাফল নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।’

তবে হিরো আলম বলেন, নির্বাচন কমিশন এখন ‘ঠুঁটো জগন্নাথ’। তা না হলে ৩৯ কেন্দ্রের ফলাফল একটার পর একটা কেন্দ্রভিত্তিক ঘোষণার পর কিছুক্ষণ বন্ধ রেখে ১০ কেন্দ্রের ফলাফল একসঙ্গে দেওয়ার কারণ কী? ভোটের ‘ফরমায়েশি’ ফল ঘোষণা করতেই এটা করা হয়েছে।

আরও পড়ুন