প্রবাসফেরত স্বামীকে নিয়ে বাবার বাড়ি যাচ্ছিলেন খাদিজা, ফিরলেন লাশ হয়ে

ঝালকাঠি সদর উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদের কাছে যাত্রীবাহী বাস পুকুরে পড়ে ১৭ জনের মৃত্যু হয়। শনিবার দুপুরে বাসটি উদ্ধারের সময় স্থানীয়দের ভিড়
ছবি: প্রথম আলো

পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার তেলিখালী গ্রামের রাসেল সিকদার। বিয়ের পর চলে যান প্রবাসে। ছয় দিন আগে দেশে ফেরেন। এরপর স্ত্রী খাদিজা আক্তারের সঙ্গে শ্বশুরবাড়ি শরীয়তপুর যাওয়ার জন্য গতকাল শনিবার রওনা হয়েছিলেন তিনি। তাঁদের সেই আনন্দের যাত্রা মুহূর্তেই বিষাদে পরিণত হয়েছে। সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন খাদিজা (২৫), গুরুতর আহত হন রাসেল।

গতকাল সকালে ‘বাসার স্মৃতি’ নামের যাত্রীবাহী একটি বাস ৬৫ থেকে ৭০ জন যাত্রী নিয়ে পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া থেকে বরিশালের দিকে যাচ্ছিল। পথে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ঝালকাঠি সদর উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদসংলগ্ন একটি পুকুরে পড়ে যায় বাসটি। এতে ১৭ জন নিহত ও ৩৪ জন আহত হন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে খাদিজাসহ আটজনের বাড়ি ভান্ডারিয়ায়।

আরও পড়ুন

প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পাঁচ বছর আগে রাসেল সিকদার ও খাদিজা আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের পর স্ত্রীকে রেখে সৌদি আরবে চলে যান রাসেল সিকদার। ছয় দিন আগে তিনি বাড়িতে আসেন। গতকাল সকালে খাদিজা আক্তারকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি শরীয়তপুরে যাওয়ার জন্য বরিশালগামী বাসে ওঠেন রাসেল সিকদার। বরিশাল থেকে সড়কপথে শরীয়তপুরে তাঁদের যাওয়ার কথা ছিল।

আজ সকালে মুঠোফোনে রাসেল সিকদার বলেন, ‘খাদিজা আক্তারের ইচ্ছায় তাঁকে নিয়ে বাবার বাড়িতে যাচ্ছিলাম। পথে বাস দুর্ঘটনায় খাদিজা আক্তার মারা গেল। গতকাল সকালে আমাদের যাত্রা ছিল আনন্দের। এক ঘণ্টার মধ্যে সে আনন্দ বিষাদে পরিণত হয়ে গেল।’

আরও পড়ুন

ভান্ডারিয়া উপজেলার তেলিখালী ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, রাসেল সিকদার দীর্ঘদিন প্রবাসজীবন কাটিয়ে বাড়ি এসেছিলেন। শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার পথে দুর্ঘটনায় স্ত্রী খাদিজা নিহত হন। গতকাল রাতেই তাঁর লাশ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। আজ সকালে তেলিখালী গ্রামে খাদিজার দাফন সম্পন্ন হয়েছে।