পাবনায় ইন্টার্ন নার্সের পক্ষ থেকে মামলা, কর্মবিরতি অব্যাহত

ইন্টার্ন নার্সকে মারধরের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে পাবনা শহরের শালগাড়িয়ে হাসপাতাল সড়কে
ছবি: হাসান মাহমুদ

পাবনা জেনারেল হাসপাতালে এক ইন্টার্ন নার্সকে মারধরের ঘটনার প্রতিবাদে নার্সদের কর্মবিরতি অব্যাহত আছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে দ্বিতীয় দিনের মতো তাঁরা কাজে যোগ দেননি। পরে দুপুরে শহরে বিক্ষোভ মিছিল করে ৮ দফা দাবি জানিয়ে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন ইন্টার্ন নার্সরা।

এদিকে মারধরের ঘটনার দুই দিন পর আজ দুপুরে অভিযুক্ত দালাল সাদ্দাম হোসেনের (৩০) নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা চার থেকে পাঁচজনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। মারধরের শিকার ইন্টার্ন নার্স রাজা হোসেন (২৫) বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন। তবে এ ঘটনায় পুলিশ এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।

আরও পড়ুন

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে সাদ্দাম হোসেন (৩০) নামের এক দালালের বিরুদ্ধে এক ইন্টার্ন নার্সকে মারধরের অভিযোগ ওঠে। মারধরের শিকার ইন্টার্ন নার্সের নাম রাজা হোসেন (২৫)। তিনি শহরের ইছামতী নার্সিং কলেজের ডিপ্লোমা ইন সায়েন্স অ্যান্ড মিডওয়াইফারি বিষয়ের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ইন্টার্ন করছেন রাজা। মারধরের ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল দুপুরে কর্মবিরতি শুরু করেছিলেন ইন্টার্ন নার্সরা। পরে সন্ধ্যা সাতটার দিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অনুরোধে তাঁরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নেন। তবে সাদ্দাম হোসেনকে আটক করতে না পারায় গতকাল বুধবার সকাল থেকে তাঁরা আবার অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি শুরু করেন।

আন্দোলনরত ইন্টার্ন নার্সদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বুধবারের মতো আজ সকালেও তাঁরা হাসপাতালে এসে কাজে যোগ দেননি। এরপর তাঁরা হাসপাতালের বাইরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তাঁরা শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। শহর প্রদক্ষিণ শেষে তাঁরা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে গিয়ে আট দফা দাবির বিষয়ে স্মারকলিপি দেন।

দ্বিতীয় দিনের মতো ইন্টার্ন নার্সরা কাজে যোগ দেননি
ছবি: হাসান মাহমুদ

আট দফা দাবিগুলো হলো অভিযুক্ত সাদ্দাম ও তাঁর সহযোগীদের গ্রেপ্তার, হাসপাতালে নার্সদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, নার্সদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা, দালাল চক্র বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, নার্সদের সঙ্গে অন্য কর্মকর্তাদের ভালো ব্যবহার করা, নার্সদের অবহেলা না করে নার্স বলে সম্বোধন করা, দালালের মাধ্যমে ইসিজিসহ অন্য যেকোনো যন্ত্রপাতি হাসপাতালে প্রবেশ না করা, হাসপাতালের আয়া-ওয়ার্ড বয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের নির্দিষ্ট ড্রেসকোড (পোশাক) মেনে চলা।

স্মারকলিপি দিতে গিয়ে বাংলাদেশ ডিপ্লোমা স্টুডেন্ট নার্সেস ইউনিয়ন পাবনা জেলা শাখার সভাপতি জাহিদ হাসান বলেন, ‘নার্সদের নিরাপত্তার স্বার্থে আট দফা দাবি আমাদের যৌক্তিক দাবি। এই দাবি না মানা পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।’

এ প্রসঙ্গে পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, ‘নার্সদের দাবির বিষয়গুলো আমরা গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। ঘটনায় দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য থানা-পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কৃপা সিন্দু বালা বলেন, মামলা হওয়ার পরই অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ধরতে অভিযান শুরু হয়েছে। দ্রুতই তাঁকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
এ প্রসঙ্গে হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ওমর ফারুক মীর বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা ইন্টার্ন নার্সদের সঙ্গে আলোচনা করছি। আশা করছি দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে।’