আখাউড়ায় হত্যা মামলার আসামিদের বসতঘরে আগুন, এলাকায় উত্তেজনা

আগুনে পুড়ে যাওয়া বসতঘর। মঙ্গলবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলায় শিবনগর গ্রামেছবি: সংগৃহীত

ব্র্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলায় পাওনা টাকার জের ধরে মো. মোরসালিন ভূঁইয়া হত্যার ঘটনায় করা মামলার আসামিদের তিনটি বসতঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকাল পৌনে ৯টার দিকে উপজেলার শিবনগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। তবে এ সময় পরিবারসহ হত্যা মামলার আসামিরা বাড়িতে ছিলেন না।

গত রোববার বিকেলে উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়নের শিবনগর গ্রামের দেনাদার আবদুল্লাহর তালাবদ্ধ বসতঘর থেকে মোরসালিনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরের দিন বিকেল পাঁচটার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. সামিউল আলমের আদালতে সোহরাব হোসেন নামের গ্রেপ্তার এক আসামি পাওনা টাকার জের ধরে মোরসালিনকে শ্বাস রোধ করে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

আরও পড়ুন

নিহত মোরসালিন উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়নের মিনারকুট গ্রামের নূর মোহাম্মদের ছেলে। এ ঘটনায় করা হত্যা মামলায় প্রধান আসামি মো. আবদুল্লাহ উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়নের শিবনগর গ্রামের বাসিন্দা। ঘটনার পর থেকে পরিবারসহ তিনি পলাতক।

স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সকাল থেকে শিবনগর এলাকায় পুলিশ পাহারায় ছিলেন। আজ সকাল পৌনে ৯টার দিকে পুলিশ শিবনগর এলাকা থেকে অন্যত্র সরে যায়। এই সুযোগে স্থানীয় দুবৃর্ত্তরা প্রবাসী সেলিম মিয়া, তাঁর দুই ভাই হত্যা মামলার আসামি আবদুল্লাহ ও শাহাদুলের দুটি মাটির ঘর এবং একটি টিনের বসতঘরে আগুন দেয়। এতে তিনটি বসতঘর পুড়ে ছাই হয়ে যায়।

খবর পেয়ে আখাউড়া ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভান। পরিস্থিতি বিবেচনায় শিবনগর এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

মনিয়ন্দ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘আগুন লাগানোর বিষয়টি জানতে পেরেছি। তবে কে বা কারা লাগিয়েছে, সেটি বুঝতে পারছি না।’

স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নিহত মোরসালিন ও অভিযুক্ত আবদুল্লাহ দুজনই এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। আবদুল্লাহর বিরুদ্ধে ১১টি মাদক এবং পুলিশকে মারধর ও আহত করার ঘটনায় আরও ৫টিসহ মোট ১৬টি মামলা রয়েছে। আর মোরসালিনের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য আইনে চারটি মামলা রয়েছে। মাদক নিয়ে বিরোধের জের ধরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়ে থাকতে পারে।

আখাউড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, সকাল পৌনে ৯টার দিকে ওই গ্রাম থেকে পুলিশ একটু সরে অন্যদিকে সরে গেলে কে বা কারা তিনটি বসতঘরে আগুনে ধরিয়ে দেয়। কারা ঘটনা ঘটিয়েছে, তা জানার চেষ্টা চলছে।