আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনায় নোটিশের জবাব দিলেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী গোলাপ

আদালতে হাজিরা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মাদারীপুর-৩ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবদুস সোবহান মিয়া। রোববার মাদারীপুর আদালত প্রাঙ্গণেছবি: প্রথম আলো

নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনায় মাদারীপুর-৩ (কালকিনি, ডাসার ও সদরের একাংশ) আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আবদুস সোবহান মিয়া ওরফে গোলাপ কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব দিয়েছেন। আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান ও যুগ্ম জেলা জজ (ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল) মো. শরিফুল হকের আদালতে সশরীর হাজির হয়ে লিখিত জবাব দেন তিনি।

একই সময় নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে অভিযোগকারী একই আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনা বেগম প্রমাণ নিয়ে আদালতে হাজির হন। দুই প্রার্থীর মুখোমুখি বক্তব্য শোনেন আদালতের বিচারক। তবে নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি।

ঘণ্টাখানেক পর আদালত থেকে বের হয়ে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আবদুস সোবহান মিয়া। তিনি বলেন, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার দিন তিনি কোনো ধরনের নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করেননি। বিচারকের কাছে লিখিত বক্তব্যে তিনি তা জানিয়েছেন। নিয়ম মেনেই নির্বাচনী কার্যক্রম চালাচ্ছেন।

স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনা বেগম বলেন, আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে বিচারকের সামনে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি নৌকার প্রার্থী। তিনি যে আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন, এটা প্রমাণিত। বিচারকের কাছে ভিডিও ও ছবি আকারে তা উপস্থাপন করা হয়েছে। এ ছাড়া নৌকার প্রার্থী যেভাবে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করেছেন, তা নিয়ে দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে সচিত্র সংবাদও প্রকাশিত হয়েছে, যা আদালতের নজরে এসেছে। এরপরও প্রার্থী যদি নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন, তাহলে তা খুবই হাস্যকর।

গত বৃহস্পতিবার সকাল নয়টার দিকে আবদুস সোবহান রাজধানী ঢাকা থেকে বিশাল গাড়িবহর নিয়ে বের হন। পরে বেলা ১১টার দিকে তাঁর নির্বাচনী এলাকা ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের মস্তফাপুর আসার পর তাঁর সঙ্গে ২ শতাধিক মোটরসাইকেল, অন্তত ৯০টি ছোট গাড়ি (মাইক্রোবাস ও প্রাইভেট কার), ৭ থেকে ৮টি পিকআপ ভ্যান বহরে যুক্ত হয়। এরপর বিশাল এক বহর নিয়ে এগিয়ে যান কালকিনি পৌরসভা চত্বরে। এ সময় ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের ভুরঘাটা ও কালকিনি উপজেলার প্রধান সড়কে প্রায় সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এক ঘণ্টার বেশি সময় দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ মানুষ।

এ ঘটনায় ওই দিনই আবদুস সোবহানের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. মারুফুর রশিদ খানের কাছে লিখিত চিঠি দেন একই আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও কালকিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি তাহমিনা বেগম এবং আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী কালকিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তৌফিকুজ্জামান শাহীন। পরে রিটার্নিং কর্মকর্তা বিষয়টি তদন্তের জন্য নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটিকে নির্দেশ দেন। গতকাল শনিবার দুপুরের পর অভিযুক্ত প্রার্থীর হাতে চিঠি পৌঁছে দেওয়া হয়। চিঠিতে আজ বেলা ১১টায় মাদারীপুর-৩ আসনের নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান ও যুগ্ম জেলা জজ আদালতের বিচারক মো. শরিফুল হকের কার্যালয়ে হাজির হয়ে বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়। আরেকটি চিঠিতে দুই অভিযোগকারীকে আদালতে হাজির হতে বলা হয়।

আরও পড়ুন