বরগুনায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী ধীরেন্দ্রসহ পাঁচজনকে অর্থদণ্ডের সুপারিশ

সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু
ছবি: সংগৃহীত

আচরণবিধি ভেঙে বর্ধিত সভার নামে নির্বাচনী প্রচারণা করায় বরগুনা-১ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুকে অর্থদণ্ডের সুপারিশ করেছে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি। একই সভা থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ভয়ভীতি ও হুমকি দেওয়ায় আরও তিন নেতাকে অর্থদণ্ডের সুপারিশ করা হয়েছে।

এদিকে নির্বাচনী প্রচারণায় রঙিন পোস্টার ব্যবহার করায় স্বতন্ত্র প্রার্থী খলিলুর রহমানকেও অর্থদণ্ডের সুপারিশ করা হয়। গতকাল শনিবার বরগুনা-১ (সদর, আমতলী ও তালতলী) আসনের নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান এবং যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আহমদ সাঈদ স্বাক্ষরিত তিনটি অনুসন্ধান প্রতিবেদন নির্বাচন কমিশনে (ইসি) পাঠানো হয়েছে। সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০০৮–এর আলোকে এসব সুপারিশ করা হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ৯ ডিসেম্বর তালতলী উপজেলা খাদ্যগুদামসংলগ্ন কলবাড়িতে তালতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের ব্যানারে ‘বিশেষ বর্ধিত সভা’ আয়োজন করা হয়। যেখানে আচরণ বিধিমালা ভঙ্গ করে বিপুল জমায়েত ও নির্বাচনে জয় লাভের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেওয়া হয় বলে স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম সরোয়ারের পক্ষে তাঁর আইনজীবী হুমায়ূন কবির নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির কাছে অভিযোগ করেন। এরপর আওয়ামী লীগের প্রার্থীসহ ৯ জনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। ওই ৯ জনের পক্ষে গত বুধবার নোটিশের জবাব দেন ধীরেন্দ্র দেবনাথের আইনজীবী এম মজিবুল হক। নোটিশের জবাব পাওয়ার পর তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে অর্থদণ্ডের সুপারিশ করা হয় বলে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি সূত্রে জানা গেছে।

আরও পড়ুন

অনুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দের আগে নির্বাচনী প্রচারণা নিষিদ্ধ থাকলেও তালতলী উপজেলা আওয়ামী লীগ বর্ধিত সভার নামে নির্বাচনী প্রচারণা সভার আয়োজন করে। ওই জনসভায় প্রার্থী ধীরেন্দ্র দেবনাথ নির্বাচনী প্রচারণামূলক বক্তব্য দিয়ে আচরণ বিধিমালার বিধান লঙ্ঘন করেছেন। এটিকে নির্বাচন–পূর্ব একটি অনিয়ম উল্লেখ করে তাঁকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানার সুপারিশ করা হয়। সভার আয়োজন করায় তালতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজবি-উল-কবির জোমাদ্দার, স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ভয়ভীতি ও হাত-পা ভাঙার হুমকি দেওয়ায় আমতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিয়ার রহমান ও কড়ই বাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল বারেক মাঝিকে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানার সুপারিশ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন

এদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী খলিলুর রহমান ও তাঁর ভাইয়ের ছেলে বরগুনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল কবিরকে প্রার্থীর রঙিন ছবি দিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা করায় কঠোরভাবে সতর্ক করা হয়। নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবে খলিলুর রহমান তাঁর লোকজন দিয়ে নিজের রঙিন ছবিসংবলিত ব্যানার টানিয়ে আচরণ বিধিমালা ভঙ্গ করেছেন বলে আরেকটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এ জন্য তাঁকে সাত হাজার টাকা জরিমানার সুপারিশ করা হয়।

জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মোহা. রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটি নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি অবলোকন করে প্রতিনিয়ত নির্বাচন কমিশনের কাছে প্রতিবেদন দিয়ে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে দুই প্রার্থীসহ বেশ কয়েকজন ব্যক্তিকে জরিমানার সুপারিশ করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন থেকে নির্দেশনা এলেই জরিমানার বিষয়টি কার্যকর করা হবে।

আরও পড়ুন