ঢাকা ও বগুড়ায় সংসদীয় আসনের উপনির্বাচনে প্রার্থী হওয়া আলোচিত আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলম বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম লীগ নামের একটি সংগঠনে যোগদান করেছেন। যোগদানের পর সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে আজ মঙ্গলবার তিনি গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে যান।
টুঙ্গিপাড়া থেকে মুঠোফোনে হিরো আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধকে ভালোবাসি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ ও লালন করি। মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে আছি। এ জন্য কয়েক দিন আগে মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম লীগের কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক সম্পাদক হিসেবে যোগদান করেছি। প্রজন্ম লীগ কোনো রাজনৈতিক দল নয়; এটি শুধু সংগঠন। এর সঙ্গে আওয়ামী লীগে যোগদানের কোনো সম্পর্ক নেই।’
হিরো আলম আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম লীগে যোগদান করলেও আওয়ামী লীগের কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে তিনি অংশ নেবেন না। আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়নও চাইবেন না। তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধকে ভালোবাসি বলেই বঙ্গবন্ধুকে ভালোবাসি। একজন সাহসী রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বকেও শ্রদ্ধা করি। কিন্তু আওয়ামী লীগের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডকে সমর্থন করি না।’
বগুড়া-৪ ও ৬ আসনের উপনির্বাচনের পর রাজধানীতে এক ‘শান্তি সমাবেশে’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের হিরো আলমকে নিয়ে বলেছিলেন, ‘হিরো আলম জিরো হয়ে গেছে।’ এর এক দিন পর ওবায়দুল কাদেরকে তাঁর বিরুদ্ধে নির্বাচন করার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিলেন হিরো আলম।
ওবায়দুল কাদেরকে চ্যালেঞ্জ করার পর মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম লীগে যোগদানের বিষয়ে হিরো আলম বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে দেশে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়নি, হবেও না। আওয়ামী লীগ ষড়যন্ত্র করে ঢাকা ও বগুড়ার উপনির্বাচনে আমাকে হারিয়ে দিয়েছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতারা আমার ওপর হামলা করেছে। আওয়ামী সরকারের অধীনে দেশে কোনো নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সম্ভব নয়। এ কারণে আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন চাইব না। সবার অংশগ্রহণে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হলে অন্য কোনো দল থেকে প্রার্থী হব।’
বগুড়ার প্রত্যন্ত এরুলিয়া গ্রামে একসময় সিডি বিক্রি করতেন হিরো আলম। সিডি যখন চলছিল না, তখন কেব্ল সংযোগ ব্যবসা শুরু করেন। সেই ব্যবসার সুবাদে তিনি মিউজিক ভিডিও তৈরি শুরু করেন। ইউটিউবে মিউজিক ভিডিও ছাড়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমে নানা আলোচনা হয়। ২০১৮ সালে নির্বাচন করে তিনি আলোচনায় আসেন। পরে বগুড়া-৪ ও ৬ এবং ঢাকা-১৭ আসন থেকে উপনির্বাচনে সংসদ সদস্য প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
সর্বশেষ ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে ভোট গ্রহণ চলাকালে হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত একটি যৌথ বিবৃতি দেন। ঢাকার মার্কিন দূতাবাস তাদের ওয়েবসাইট এবং ফেসবুক পেজে ওই বিবৃতি প্রচার করে। হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইসও টুইট করেছিলেন।