বাবার বয়স ৫১ আর ছেলের বয়স ১০৪ বছর

আবদুল রশিদ (বামে) ও তাঁর বাবা আবদুল আজিজ
ছবি: পরিচয়পত্র থেকে সংগ্রহীত

নেত্রকোনার দুর্গাপুর পৌরসভার বাসিন্দা আবদুল রশিদ একটি সমিতি থেকে ঋণ তুলতে চেয়েছিলেন। নানা কাগজপত্রের সঙ্গে সেখানে জমা দিতে হয় জাতীয় পরিচয়পত্র। কাগজপত্র দেখে সেখানকার কর্মীরা তাঁকে বলেন, তাঁর বয়স নাকি তাঁর বাবার চেয়ে ৫৩ বছর ২ মাস বেশি।

আবদুল রশিদ দুর্গাপুর পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণপাড়া এলাকার বাসিন্দা আবদুল আজিজের ছেলে।

বাবা-ছেলের জাতীয় পরিচয়পত্র দেখে জানা যায়, বাবা আবদুল আজিজের জন্মতারিখ ১৯৭২ সালের ৪ জুলাই। সে হিসাবে বাবার বর্তমান বয়স ৫১ বছর ৩ মাস। আর ছেলে আবদুল রশিদের জন্মতারিখ ১৯১৯ সালের ৩ মে। সে হিসাবে রশিদের বয়স ১০৪ বছর ৫ মাস। অর্থাৎ বাবার চেয়ে ছেলে ৫৩ বছর ২ মাসের বড়।  শুধু বয়সই নয়, রশিদের নামও ভুল লেখা হয়েছে জাতীয় পরিচয়পত্রে। আবদুল রশিদ বদলে হয়েছে আবুল রশিদ।

আবদুল রশিদ
ছবি: সংগৃহীত

আবদুল রশিদ বলেন, ঘর বানানোর জন্য তিনি একটি সমিতি থেকে ঋণ তুলতে গেলে জাতীয় পরিচয়পত্রের এই বয়সের সমস্যা ধরা পড়ে। বয়স বেশি ধরা পড়ায় সমিতি তাঁকে ঋণ দেয়নি।

রশিদ বলেন, ‘লেখাপড়া করিনি, তাই তেমন কিছুই বুঝি না। এত বেশি বয়স দেওয়া হয়েছে বুঝিনি। আমার বয়স ৩৫ বছর। আমার আইডি কার্ড ঠিক (সংশোধন) করতে গত দেড়-দুই মাস আগে নির্বাচন অফিসে গেছিলাম। পরে বয়স ঠিক করতে আবেদন করতে বলে। কিছু টাকা খরচ হইব বলছিল। এরপর তাঁদের আমি বলছি, গরিব মানুষ দিন আনি দিন খাই। এহন টাকা নাই। পরে টাকা জোগাড় কইরা আপনাদের কাছে আইয়াম নে।’

আবদুল আজিজ মুঠোফোনে বলেন, তাঁর ছেলে জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে অনেক কাজ করতে পারছে না। এটা ঠিক হওয়া দরকার। তাঁরা গরিব-মূর্খ মানুষ। লেখাপড়া জানেন না। তাই ভোটার করার সময় নির্বাচন কার্যালয়ের লোকজন যেভাবে বয়স লিখেছে, সেভাবেই আছে।

আরও পড়ুন

এ ব্যাপারে দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা তপন চন্দ্র শীল বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্রে  যাঁদের বয়স ভুল রয়েছে, তাঁরা আবেদন করলে সঙ্গে সঙ্গে সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ওই ব্যক্তি অনলাইনে আবেদন করলে বয়স সংশোধন করে দেওয়া হবে। মূলত ২০০৭ সালে যখন সার্ভারে ভোটার তালিকা করা হয়েছিল, তখন বয়স ভুলের সমস্যাটি হয়েছে। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তপন চন্দ্র শীল জানান, এর আগেও দুর্গাপুরের চণ্ডীগড় ইউনিয়নের নিলাখালী গ্রামের বাসিন্দা বাবা মুসলেম উদ্দিনের চেয়ে ও তাঁর ছেলে মঞ্জুরুল হকের বয়স ৩৪ বছর বেশি দেখানো হয়। পরে তা ঠিক করে দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন