৫৩ দিন পর কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা ক্লাসে ফিরেছেন, চলবে কর্মবিরতিও
৫৩ দিন বন্ধ থাকার পর কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকেরা আজ রোববার ক্লাসে ফিরেছেন। উপাচার্য-শিক্ষক সমিতির দ্বন্দ্বের জেরে বিশ্ববিদ্যালয়টি দফায় দফায় বন্ধ ছিল। এ ছাড়া ঈদুল আজহা, গ্রীষ্মকালীন ছুটিও ছিল।
বিশ্ববিদ্যালয় খোলার বিষয়টি আজ সকালে প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মো. আমিরুল হক চৌধুরী। তিনি বলেন, ৯৫তম সিন্ডিকেট সভায় বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এর আগে গত শুক্রবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ক্লাসে ফেরার ঘোষণা দেয়। তবে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত প্রতিদিন দুই ঘণ্টার (দুপুর ১২টা থেকে বেলা ২টা) অবস্থান কর্মসূচি পালন করার ঘোষণাও আছে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে। এ ছাড়া শিক্ষকদের দাবি আদায়ের জন্য ২০ জুলাই পর্যন্ত প্রশাসনকে সময় বেঁধে দিয়েছে শিক্ষক সমিতি।
শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মো. আবু তাহের বলেন, ‘আমরা সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত মেনে আগামীকাল থেকে সশরীর ক্লাস নেব। প্রয়োজনে শিক্ষার্থীদের স্বার্থে অনলাইনে অতিরিক্ত ক্লাস নিয়ে হলেও তাঁদের ক্ষতি পুষিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব। এ ছাড়া আমাদের কর্মসূচিও অব্যাহত থাকবে।’
উপাচার্য অধ্যাপক এ এফ এম আবদুল মঈন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বজায় থাকুক সেটাই আমার চাওয়া। শিক্ষার্থীরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে জন্য শিক্ষকেরা যত্নশীল হবেন বলে আশা করি। এ ছাড়া শিক্ষকদের দাবিগুলো নিয়ে আমরা কাজ করছি। শিগগিরই সব দাবির বাস্তবায়ন হয়ে যাবে।’
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ৭ দফা দাবি আদায়ে গত ১৩ ও ১৪ মার্চ প্রথম দফায় ক্লাস বর্জন করে। পরবর্তী সময়ে দ্বিতীয় দফায় ১৯ মার্চ থেকে ২৭ মার্চ পর্যন্ত ক্লাস বর্জন করে। ঈদুল ফিতরের বন্ধ শেষে তৃতীয় দফায় ২১ থেকে ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত ক্লাস বর্জন করে শিক্ষক সমিতি। সর্বশেষ ২৯ এপ্রিল শিক্ষকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের জন্য সব ধরনের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেয় শিক্ষক সমিতি। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ৩০ এপ্রিল জরুরি সিন্ডিকেট সভা ডেকে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে প্রশাসন। এরপর ৫ জুন ৯৫তম সিন্ডিকেট সভায় বিশ্ববিদ্যালয় খোলার সিদ্ধান্ত হয়। ২১ জুন শিক্ষক সমিতিও ক্লাসে ফেরার ঘোষণা দেয়।
দীর্ঘদিন পর ক্লাসে ফিরতে পেরে খুশি শিক্ষার্থীরা। তবে সেশনজটের আশঙ্কার কথাও তাঁরা জানিয়েছেন। ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী জাকারিয়া সাইমুম প্রথম আলোকে বলেন, ‘দীর্ঘ বন্ধের কারণে আমরা পড়ালেখায় পিছিয়ে পড়েছি। আমাদের প্রত্যাশা, শিক্ষকেরা আমাদের আর পিছিয়ে রাখবেন না। ছয় মাসের যে সেমিস্টার, তা আশা করি তাঁরা চার মাসের মধ্যে শেষ করে দেবেন। এ ছাড়া গত দুই মাস যে জটিলতার কারণে ক্যাম্পাস বন্ধ ছিল, আশা করি সামনের দিনগুলোতে আমাদের আর এই দুর্ভোগ পোহাতে হবে না।’