পেটানোর ঘটনার ‘মীমাংসা’, হাসপাতাল থেকে চলে গেছেন ভুক্তভোগী ভ্যানচালক

রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অভিযোগকারী ভ্যানচালক আফজাল খাঁ। গত রোববার দুপুরে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালেফাইল ছবি

রাজবাড়ী সদরে কুকুরের তাড়া খেয়ে মালিককে নিজ কার্যালয়ে ডেকে নির্যাতনের ঘটনায় অভিযোগ করার এক দিন পরই প্রত্যাহার করে নিয়েছেন ভ্যানচালক আফজাল খাঁ। তাঁর পরিবারের দাবি, গত রোববার রাতে উভয় পক্ষ বিষয়টি নিয়ে বসে মীমাংসা করে নিয়েছে।

অভিযোগ প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করে রাজবাড়ী সদর থানা-পুলিশ। তবে এ বিষয়ে কথা বলার জন্য আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভ্যানচালক আফজালের মুঠোফোনে কল করে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।

আরও পড়ুন

আফজাল খাঁ (৩০) রাজবাড়ী সদর উপজেলার চন্দনী ইউনিয়নের বাড়াইজুড়ি গ্রামের বাসিন্দা। রাজবাড়ীর ১ নম্বর আমলি আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুমন হোসেনের বিরুদ্ধে তিনি রাজবাড়ী সদর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছিলেন।

এর আগে গত শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) আহত অবস্থায় আফজাল রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে ভর্তি হন। এর পর থেকে তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

এ বিষয়ে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক শেখ মোহাম্মদ আবদুল হান্নান বলেন, গতকাল সোমবার সকালে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ওয়ার্ড পরিদর্শনে গিয়ে আফজালকে তাঁর বিছানায় দেখতে পাননি। তাঁর স্ত্রীসহ পরিবারের অন্য সদস্যরাও সেখানে ছিলেন না। তিনি কাউকে কিছু না জানিয়ে আগের দিন রোববার রাতের কোনো এক সময় হাসপাতাল ছেড়ে চলে যান। সঙ্গে হাসপাতালে ভর্তিসংক্রান্ত কোনো কাগজপত্রও নেননি।

আজ বেলা একটার দিকে রাজবাড়ী শহর থেকে প্রায় ১৩ কিলোমিটার দূরে বাড়াইজুড়ি গ্রামের বাড়িতে গিয়েও আফজালকে পাওয়া যায়নি। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন তাঁর মা আর বড় ভাই আনজাল খাঁ। আনজাল খাঁ বলেন, বৃহস্পতিবার ওই ম্যাজিস্ট্রেটকে (সুমন হোসেন) বাড়াইজুড়ি বাজার এলাকায় যেসব কুকুর তাড়া করেছিল, সেগুলো তাঁদের নয়। আফজালকে যখন কুকুরের মালিক হিসেবে ডাকা হয়েছিল, তখন থেকেই বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হয়েছিল।

আনজাল আরও বলেন, ‘রোববার রাত ১০টার দিকে ম্যাজিস্ট্রেটের রাজবাড়ী শহরের বাসায় উভয় পক্ষ বসে মীমাংসা করেছি। ম্যাজিস্ট্রেট স্যার ভুল স্বীকার করে আফজালের চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন। আমাদেরও ভুল থাকলে ক্ষমাসুন্দরভাবে দেখতে অনুরোধ করেছি। পরে ওই দিন রাতেই থানায় দেওয়া অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিয়েছি।’

জানতে চাইলে রাজবাড়ী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহমুদুর রহমান বলেন, রোববার রাত সোয়া ১১টার দিকে আফজাল খাঁ তাঁর বড় ভাইয়ের সঙ্গে থানায় গিয়ে অভিযোগ প্রত্যাহারের জন্য আবেদনপত্র জমা দেন। তাঁদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযোগ প্রত্যাহার করা হয়েছে।

গত শনিবার বিকেলে ম্যাজিস্ট্রেট সুমন হোসেন তাঁর কার্যালয়ে ডেকে ভ্যানচালক আফজালকে নির্যাতন করেন বলে অভিযোগ ওঠে। যদিও পরে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেন। আজ বক্তব্য জানতে তাঁর মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি।