এ কে আজাদ বললেন, ‘শামীম হক আমার ভাই, ভেদাভেদ ভুলে আসুন একসঙ্গে কাজ করি’

সংবাদ সম্মেলনে ফরিদপুর-৩ আসনের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য এ কে আজাদ। মঙ্গলবার দুপুরে ফরিদপুর শহরের ঝিলটুলী মহল্লায় নিজ বাড়িতে
ছবি: প্রথম আলো

ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য এ কে আজাদ নির্বাচনে তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকার প্রার্থী শামীম হকের প্রতি ভেদাভেদ ভুলে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন। আজ মঙ্গলবার ফরিদপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানান এ কে আজাদ। বেলা একটার দিকে ফরিদপুর শহরের ঝিলটুলী মহল্লায় এ কে আজাদের নিজ বাড়িতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুর-৩ আসনে ৬৯ হাজার ৯ ভোটের ব্যবধানে জয় পেয়েছেন ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে আজাদ। তাঁর ভোট ১ লাখ ৩৪ হাজার ৯৮। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকার প্রার্থী শামীম হক পেয়েছেন ৭৫ হাজার ৮৯ ভোট।

আরও পড়ুন

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে এ কে আজাদ উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, ‘গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ স্বাধীন গণমাধ্যম। আপনাদের মাধ্যমে ফরিদপুর-৩ আসনের আমার প্রাণপ্রিয় প্রত্যেক মানুষের প্রতি রইল অশেষ কৃতজ্ঞতা। যাঁরা মূল্যবান ভোট দিয়ে আমাকে জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত করেছেন, তাঁদের কাছে চিরঋণী আমি।’

এ কে আজাদ বলেন, ‘প্রচারণা শুরুর পর থেকে ধারাবাহিকভাবে ঈগলের অনেক নেতা-কর্মী ও সমর্থকের ওপর হামলা, নির্যাতন চালানো হয়েছে। নির্বাচনের আগের দিন আমার প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল হক ওরফে ভোলা মাস্টারের ওপর নির্মম হামলা চালানো হয়। শুরু থেকে হামলা, মিথ্যা মামলা, ভয়ভীতি উপেক্ষা করে মানুষ আমাকে সাহস ও সমর্থন দিয়ে গেছেন। হামলা, মামলার শিকার হয়েও কোনো প্রতিহিংসার বহিঃপ্রকাশ ঘটাননি। ব্যালটের মাধ্যমে মানুষ হামলা, মামলা, বাধাবিপত্তির জবাব দিয়েছেন।’

আরও পড়ুন
ফরিদপুর-৩ আসনে বিজয়ী ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে আজাদ (বাঁয়ে) এবং পরাজিত নৌকার প্রার্থী শামীম হক (ডানে)
ফাইল ছবি

পরাজিত নৌকার প্রার্থীর উদ্দেশে এ কে আজাদ বলেন, ‘শামীম হক জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও আমার ভাই। আমি এখনো তাঁকে অনুরোধ করছি, সব ভেদাভেদ ভুলে আসুন আমরা একসঙ্গে ফরিদপুরের উন্নয়নে কাজ করি। এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। ভোটে হেরে কাউকে দোষারোপ না করে আসুন আমরা একসঙ্গে কাজ করি।’

নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য আরও বলেন, ‘জয়ের পরপরই আমার নেতা-কর্মীদের বলেছি, কারও প্রতি কোনো ধরনের প্রতিহিংসা নয়। সবাইকে নিয়েই বিজয়ের আনন্দ উদ্‌যাপন করুন। নির্বাচনের আগেও বারবার বলেছিলাম ফরিদপুরে যেন সন্ত্রাসের রাজত্ব না হয়, চাঁদাবাজমুক্ত হয়। সেই অঙ্গীকার থেকেই বলছি, ফরিদপুরকে একটি মডেল জেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে কাজ করে যাব।’

আরও পড়ুন

এ কে আজাদ বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা শুরু থেকে একটি অবাধ, অংশগ্রহণমূলক নিরপেক্ষ নির্বাচনের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন। সারা বাংলাদেশের মতো ফরিদপুরেও সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন ও প্রধানমন্ত্রীকে এমন নির্বাচন উপহার দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি। ফরিদপুরে ৫২ শতাংশ ভোটার ভোট দিয়েছেন। বাধা, হামলা উপেক্ষা করে তাঁরা কেন্দ্রে গিয়েছেন।’

লিখিত বক্তব্যর পরে এ কে আজাদ সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ফরিদপুরের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড দমনে রাজনীতিবিদ, প্রশাসন, সাংবাদিক ও সুশীল সমাজকে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করে যাবেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে এ কে আজাদের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য বিপুল ঘোষ, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দা নুসরাত রাসুল তানিয়া প্রমুখ বক্তব্য দেন।

আরও পড়ুন