ঘন কুয়াশায় নবম দিনের মতো ফেরি চলাচল ব্যাহত, মাঝ পদ্মায় আটকে ছিল সাত ফেরি
ঘন কুয়াশার কারণে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথে নবম দিনের মতো ফেরি চলাচল ব্যাহত হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত মধ্যরাত ২টা থেকে এই পথে ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল। এতে উভয় ঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়া ছোট-বড় সাতটি ফেরি মাঝ নদীতে আটকা পড়ে। আজ শুক্রবার সকাল ৮টার পর কুয়াশা কম দেখে ফেরি চলাচল শুরু হয়।
এদিকে মানিকগঞ্জের আরিচা ও পাবনার কাজিরহাট নৌরুটেও গতকাল দিবাগত মধ্যরাত থেকে ঘন কুয়াশায় ফেরি চলাচল ব্যাহত হয়। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কুয়াশার ঘনত্ব বাড়তে থাকলে দুর্ঘটনা এড়াতে রাত সোয়া ১২টা থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। এ সময় উভয় ঘাটে ফেরি নোঙর করতে বাধ্য হয়। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে কুয়াশা কম দেখে সাড়ে ৬ ঘণ্টা পর এই রুটে ফেরি চালু হয়।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয় জানায়, চলতি মৌসুমে নবম দিনের মতো গতকাল সন্ধ্যার পর থেকে আবার ঘন কুয়াশা পড়তে থাকে। রাত বাড়ার সঙ্গে কুয়াশার ঘনত্ব বাড়তে থাকলে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া এবং আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে ফেরি চলাচল ব্যাহত হয়। দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়লে দিবাগত রাত ২টা থেকে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া রুটের ফেরি বন্ধ রাখা হয়। তার আগে উভয় ঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়া রো রো (বড়) ফেরি শাহ পরান, বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর, ভাষা শহীদ বরকত, বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান, এনায়েতপুরী এবং ইউটিলিটি (ছোট) ফেরি রজনীগন্ধ্যা ও হাসনা হেনা মাঝ নদীতে আটকা পড়ে। সাতটি ফেরিতে ১১০টির মতো পণ্যবাহী যানসহ যাত্রীবাহী নৈশকোচ ছিল। শীত ও কুয়াশায় প্রায় ৪০০ যাত্রীসহ যানবাহন চালক ও সহকারী চরম দুর্ভোগের শিকার হন। আজ সকাল ৮টার পর কুয়াশা কমতে থাকলে ফেরি চলাচল শুরু হয়।
আজ ভোরে দৌলতদিয়ার ৭ নম্বর ফেরি ঘাটে অপেক্ষা করতে দেখা যায় কুষ্টিয়া থেকে ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে আসা ব্যবসায়ী মেহেদী হাসানকে। তিনি বলেন, ঢাকায় সকালে জরুরি কাজ থাকায় গতকাল রাতে রওয়ানা করেন। সারা রাস্তায় কুয়াশার কারণে আসতে অনেক সময় লেগেছে। ঘাটে এসে দেখেন ফেরি বন্ধ হয়ে গেছে। এরপর থেকে রাতভর ঘাটেই বসে সময় পার করেন।
ফরিদপুর থেকে আসা ব্যক্তিগত গাড়ি চালক মানিক শেখ বলেন, গতকাল রাত ১০টা থেকেই সড়ক পথ কুয়াশাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। সাভারে মালিকের বাসা থেকে রাতেই আসতে বলায় রওনা করেন। পুরো পথ কুয়াশায় ঘেরা ছিল। কুয়াশা দেখে গাড়ির গতি ছিল সর্বোচ্চ ২০ কিলোমিটার। এরপর ঘাটে এসে ৭ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে বসে আছেন।
বিআইডব্লিউটিসি আরিচা কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) শাহ মো. খালেদ নেওয়াজ বলেন, কুয়াশার কারণে নবম দিনের মতো দুই রুটে ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। গতকাল মধ্যরাতে বন্ধ হয়ে ৬ ঘণ্টা পর আজ সকাল ৮টার পর দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া রুটে এবং সাড়ে ৬ ঘণ্টা পর সাড়ে ৮টা থেকে আরিচা-কাজিরহাট নৌপথে ফেরি চালু হয়। দুই রুটের মাঝ নদীতে ৮টি ফেরি আটকা পড়ায় দুর্ভোগের শিকার হন কয়েক শ যাত্রী ও যানবাহন চালক।