রুয়েটে পুরকৌশল অনুষদের ডিনকে দায়িত্ব দিল মন্ত্রণালয়, শুরু হচ্ছে পরীক্ষা কার্যক্রম
রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আটকে থাকা পরীক্ষাগুলো নেওয়ার জন্য পুরকৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো. নিয়ামুল বারিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত তিনি শুধু একাডেমিক কার্যক্রম পালন করতে পারবেন। আজ মঙ্গলবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের উপসচিব মোছা. রোখছানা বেগম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
এর আগে গত ২৫ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম সচল রাখার ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছিলেন অধ্যাপক মো. নিয়ামুল বারি। চিঠিতে তিনি পরীক্ষা গ্রহণের কথা উল্লেখ করে কোনো একজন ডিনকে এ ব্যাপারে দায়িত্ব দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। এবার তাঁকেই সে দায়িত্ব দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এর আগে গত ২৩ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মো. সেলিম হোসেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি দেন। সেই চিঠির বিষয়গুলো আমলে না নিয়ে ডিনের চিঠিটি আমলে নেওয়া হয়েছে।
রেজিস্ট্রারের পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছিল, ‘উপাচার্য না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক কাজ বন্ধ হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষা গ্রহণ ও ফলাফল প্রকাশ করা যাচ্ছে না; শিক্ষকদের উচ্চশিক্ষা, সেমিনার-সিম্পোজিয়ামে যোগদানের জন্য বিদেশ ভ্রমণের অনুমতি দেওয়া যাচ্ছে না; শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যাওয়ার অনুমতি বা এনওসি দেওয়া যাচ্ছে না; চলমান প্রকল্প ব্যয়সহ যাবতীয় রাজস্ব ব্যয় করা যাচ্ছে না এবং প্রশাসনিক সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে পড়েছে।’
অধ্যাপক নিয়ামুল বারি বলেন, রেজিস্ট্রার একটি চিঠি দিয়েছিলেন। পরে তিনি মন্ত্রণালয়ে কথা বলেছিলেন। সেখান থেকে একটি চিঠি চাওয়া হয়। তাই তিনি চিঠি দেন। এখন নতুন করে দেওয়া দায়িত্ব পালন করতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের জুলাইয়ের শেষে নিয়মিত উপাচার্য রফিকুল ইসলামের মেয়াদ শেষ হয়। পরে ৩ আগস্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে রুয়েটের জ্যেষ্ঠতম অধ্যাপক ও অ্যাপ্লায়েড সায়েন্স অ্যান্ড হিউম্যানিটিজ অনুষদের ডিন মো. সাজ্জাদ হোসেনকে উপাচার্যের দৈনন্দিন কার্যসম্পাদনের দায়িত্ব পালন করতে বলা হয়। তবে ২৮ মে পদোন্নতির দাবিতে শিক্ষকদের আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করেন তিনি। এর পর থেকে একাডেমিক পরীক্ষা ও ফলাফল প্রকাশ বন্ধ হয়ে যায়। ১১ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. তৌহিদ আরিফ খান চৌধুরী সব বিভাগকে চিঠি দিয়ে পরীক্ষা নিতে না পারার কারণও ব্যাখ্যা করেন। এ অবস্থায় গত ২২ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭ সিরিজের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার দাবিতে আন্দোলন করেন। পরে বিভিন্ন অনুষদের ডিনদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন শিক্ষার্থীরা। ২ আগস্টের মধ্যে পরীক্ষার রুটিন মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করে দেওয়া হবে বলে শিক্ষকদের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হয়। পরে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন স্থগিত করেন।
আটকে থাকা পরীক্ষাগুলোর রুটিন দেওয়া হয়েছে। ৮ আগস্ট থেকে সেগুলো শুরু হবে। রুয়েটের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. তৌহিদ আরিফ খান চৌধুরী বলেন, এখন আর পরীক্ষা নিতে কোনো বাধা নেই। ইতিমধ্যে পরীক্ষার রুটিন দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন বিভাগে বিভিন্ন সময়ে পরীক্ষা শুরু হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মো. সেলিম হোসেন বলেন, তাঁরা একটি চিঠি পেয়েছেন। একজন ডিনকে একাডেমিক দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে প্রশাসনিক দায়িত্ব দেওয়া হয়নি কাউকে। দ্রুত উপাচার্য নিয়োগের মাধ্যমেই সমস্যার সমাধান হতে পারে। তাঁরা দ্রুত উপাচার্য চান।