আবেদনের ১০ বছর পর প্রতিবন্ধী পরিচয়পত্র দেওয়ার ঘটনায় তদন্ত কমিটি

‌সিলেট শহর সমাজসেবা কার্যালয়।
ছবি: প্রথম আলো

সিলেটে আবেদন করার ১০ বছর পর এক শিশুকে প্রতিবন্ধী পরিচয়পত্র দেওয়ার ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই শিশু ছয় বছর আগে মারা গেছে। গতকাল বুধবার সিলেট বিভাগীয় সমাজসেবা কার্যালয়ের পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম এক সদস্যের ওই তদন্ত কমিটি গঠন করেন।

তদন্ত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সমাজসেবা সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক এস এম মোক্তার হোসেনকে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে তদন্ত কমিটির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সমাজসেবা সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক নিবাস রঞ্জন দাশ।

এর আগে ১৫ নভেম্বর প্রথম আলোতে ‘প্রতিবন্ধী কার্ড পেতে ১০ বছর অপেক্ষা’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল।

সমাজসেবা অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক নিবাস রঞ্জন দাশ বলেন, তদন্তের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। আজ তদন্ত কার্যক্রম শুরু করার কথা রয়েছে।

ভুক্তভোগী এইচ এম শহীদুল ইসলাম গত মঙ্গলবার বলেন, তিনি সিলেট নগরের দাড়িয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা। তাঁর বড় মেয়ে সুমাইয়া আক্তারের জন্ম ২০০৭ সালে। ২০১০ সালে মেয়ে অসুস্থ হয়। এরপর জানতে পারেন, মেয়ে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু। ২০১৩ সালে তিনি মেয়ের প্রতিবন্ধী পরিচয়পত্র তৈরির জন্য শহর সমাজসেবা কার্যালয়ে গিয়ে ছবি তুলেছিলেন। এরপর তিনি একাধিকবার সমাজসেবা কার্যালয়ে গিয়েও প্রতিবন্ধী পরিচয়পত্র পাননি। তাঁর মেয়ে ২০১৭ সালে মারা যায়। এর পর থেকে তিনি আর প্রতিবন্ধী পরিচয়পত্রের ব্যাপারে খোঁজ নেননি।

আরও পড়ুন

গত সোমবার বিকেলের দিকে তাঁর মুঠোফোনে কল দিয়ে সিলেট শহর সমাজসেবা কার্যালয় থেকে মেয়ের প্রতিবন্ধী পরিচয়পত্র সংগ্রহের জন্য বলা হয়েছিল। এ সময় তিনি জিজ্ঞেস করেন, প্রতিবন্ধী পরিচয়পত্র তৈরি করতে ১০ বছর সময় লাগে কি না? এরপর তিনি কার্যালয়ে গিয়ে বিষয়টি জানতে চেষ্টা করেন।

মঙ্গলবার এ প্রতিবেদক সমাজসেবা কার্যালয়ে গিয়ে দেখেন, শহীদুলের মতো আরও কয়েকজন ভুক্তভোগী সেখানে আছেন। কার্যালয়ের টেবিলে ২০১৬ ও ২০১৯ সালে ইস্যু হওয়া অনেক কার্ড পড়ে আছে।

আজ দুপুরে শহীদুল ইসলাম বলেন, তিনি শুধু জানতে চান, একটি প্রতিবন্ধী পরিচয়পত্র করতে ১০ বছর সময় লাগে কি না? আর এতে কার গাফিলতি রয়েছে।

এ বিষয়ে শহর সমাজসেবা কার্যালয়ে জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. আবদুর রফিক বলেন, বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। ঘটনাটি কেন ঘটেছে, সেটি তদন্তের পর জানা যাবে।