পঞ্চগড়ে আহমদিয়াদের সালানা জলসা ঘিরে কঠোর নিরাপত্তা

পঞ্চগড় জেলার মানচিত্র

পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ৯৯তম সালানা জলসা (বার্ষিক সম্মেলন) ঘিরে কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জেলা শহরসহ সদর উপজেলার ২৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পুলিশ সদস্যরা অবস্থান করবেন। ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি দিয়েছে জেলা প্রশাসন। ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠাগুলোতে ১১ থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারি পাঁচ দিন পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।

পঞ্চগড় শহরের উপকণ্ঠে আহম্মদনগর এলাকায় আহমদিয়াদের সীমানাপ্রাচীর ঘেরা নিজস্ব জলসা মাঠে ২৩ থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি তিন দিন সালানা জলসা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। নিরাপত্তার স্বার্থে জলসার সময় এগিয়ে আনা হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুল মালেক বলেন, জেলা প্রশাসনের চিঠির আলোকে ১১ থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারি পাঁচ দিন নির্দিষ্ট কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ থাকবে। একেকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রায় ১৫০ থেকে ২০০ পুলিশ থাকবে। তখন পাঠদান করা সম্ভব হবে না বলেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে বিদ্যালয়ের অফিস খোলা থাকবে এবং শিক্ষকেরা দাপ্তরিক কার্যক্রম চলমান রাখবেন।

গত বছরের ২ থেকে ৪ মার্চ ৯৮তম সালানা জলসা ঘিরে শহরে সংঘর্ষ, আহমদিয়াদের ওপর হামলা ও তাঁদের ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দুজন নিহত হন। এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, সাংবাদিকসহ শতাধিক মানুষ আহত হন। ঘটনার পর ৩২টি মামলায় ১৪ হাজারের বেশি মানুষকে আসামি করা হয়।

আরও পড়ুন

এবারও জলসা বন্ধের দাবিতে গত ২৮ জানুয়ারি সম্মিলিত খতমে নবুওয়ত সংরক্ষণ পরিষদ জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি স্মারকলিপি দিয়েছে। এ অবস্থায় জলসা ঘিরে প্রশাসনের নিরাপত্তার চাদরে ঢেকেছে পুরো পঞ্চগড়। আহম্মদনগর এলাকাসহ শহরের প্রতিটি আবাসিক হোটেল, মসজিদের সামনে ও গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বুধবার থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যদের অবস্থান করতে দেখা গেছে।

রোববার বিকেলে আহমদনগর এলাকায় আহমদিয়াদের জলসা মাঠে প্রস্তুতি চলতে দেখা গেলেও কবে থেকে জলসা হবে, সে ব্যাপারে কিছুই বলতে চাননি আহমদিয়া সম্প্রদায়ের মুখপাত্র আহমদ তবশীর চৌধুরী। তিনি বলেছেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশ চাই।’

আরও পড়ুন

পুলিশ সুপার এস এম সিরাজুল হুদা প্রথম আলোকে বলেন, এবার সালানা জলসাকে কেন্দ্র করে পর্যাপ্ত ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে প্রস্তুতি নিয়েছেন। আহমদিয়াদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জলসা অনুষ্ঠিত হবে। পুলিশের পাশাপাশি র‍্যাব ও বিজিবি নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে।

পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত বছরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমরা আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে রাখছি। আহমদিয়াদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। নিরাপত্তা পর্যাপ্ত মনে হওয়ার পর আহমদিয়াদের সঙ্গে কথা বলে জলসার সময় নির্ধারণ করা হবে।’

আরও পড়ুন