রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
ভূমিকম্পের পর শেরে বাংলা হলের শিক্ষার্থীদের নির্মাণাধীন হলে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত
ভূমিকম্পের পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরে বাংলা ফজলুল হক হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বিবেচনায় নির্মাণাধীন শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান হলে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, রাকসু এবং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। শিক্ষার্থীরা ইচ্ছা করলে আজ শনিবার থেকেই নতুন হলে উঠতে পারবেন বলে জানিয়েছে হল প্রশাসন।
গতকাল সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে অনুভূত ভূমিকম্পে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরে বাংলা ফজলুল হক হলের দেয়ালে নতুন করে ফাটল দেখা দেয়। এ ঘটনার পর শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়। পরে নিরাপত্তা চেয়ে ও হল পরিবর্তনের দাবিতে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা।
বেলা ১১টার দিকে হলের প্রধান ফটকে জড়ো হয়ে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে তাঁরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন। সেখানে সহ-উপাচার্য অধ্যাপক মাঈন উদ্দীন ও প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। পরে তাঁরা হলটি পরিদর্শন করেন। এ সময় রাকসুর ভিপি মোস্তাকুর রহমান, এজিএস এস এম সালমান সাব্বিরসহ ছাত্র সংসদের বেশ কয়েকজন প্রতিনিধিও হল পরিদর্শনে যান। পরে বিকেলে অনুষ্ঠিত সভায় শিক্ষার্থীদের নতুন হলে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এ ব্যাপারে শেরে বাংলা ফজলুল হলের প্রাধ্যক্ষ শরিফুল ইসলাম আজ সকালে প্রথম আলোকে বলেন, ‘নিরাপত্তার কারণে এই হলের শিক্ষার্থীদের নবনির্মিত কামারুজ্জামান হলে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত হয়েছে। আজ থেকেই তাঁরা নতুন হলে উঠতে পারবেন। নতুন অ্যালটমেন্টের মাধ্যমে রুম বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যদিও হলে পানি, বিদ্যুৎ, বাথরুমের যথাযথ সুবিধা নেই। সার্বিক দিক বিবেচনায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
শরিফুল ইসলাম আরও বলেন, ‘তিন-চার দিনের মধ্যেই সমস্যাগুলো সমাধান করা হবে। এই সময় নতুন হলে কিংবা বন্ধুদের সঙ্গে থাকার জন্য বলা হয়েছে। দুইজনের রুমে আপাতত তিনজনকে থাকতে হবে। এই ঝুঁকিপূর্ণ হলে থাকতে শিক্ষার্থীদের নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। এই হল বসবাসের উপযোগী কি না, তা জানতে বাইরে থেকে বিশেষজ্ঞ এনে পরীক্ষা করা হবে। তারপর কী ধরনের সংস্কার করা হবে, তা জানা যাবে।’
শেরে বাংলা ফজলুল হলের আবাসিক শিক্ষার্থী হাসান আলী বলেন, ‘বর্তমানে হলের অবস্থা বিবেচনায় প্রশাসন যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেটিকে সাধুবাদ জানাচ্ছি। হল প্রশাসন আমাদের আপাতত বন্ধুবান্ধব কিংবা নতুন হলে থাকতে বলেছে। নির্মাণাধীন কামারুজ্জামান হলের কিছু কাজ বাকি আছে। শিগগিরই সেগুলো সম্পন্ন করা হবে বলে জানানো হয়েছে।’
এই হলের আরেক আবাসিক শিক্ষার্থী আলজাবের আহমেদ বলেন, ‘নতুন হলে যাওয়ার জন্য গতকাল রুম বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ওই হলে পানি, বিদ্যুৎসহ কিছু অসুবিধা রয়েছে। এ জন্য এখনো কেউ সেখানে যায়নি। তবে আজ থেকে ধীরে ধীরে শিক্ষার্থীরা সেখানে শিফট করবেন।’