নির্বাচনী সহিংসতায় শিশু নিহতের ঘটনায় তদন্ত কমিটি

প্রতিবেশীদের সান্ত্বনায় কান্না থামছে না সুরাইয়ার নানি মহিফুল বেগমের। ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলার বাচোর ইউনিয়নে
ছবি: প্রথম আলো

ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনকে ঘিরে সহিংসতায় সাত মাস বয়সী শিশু সুরাইয়া নিহত হওয়ার ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার তদন্তের কাজ শুরু করেছেন কমিটির সদস্যরা।

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রামকৃষ্ণ বর্মণকে আহ্বায়ক করে গঠিত কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন ঠাকুরগাঁওয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মির্জা তারেক আহমেদ বেগ ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সাফিকুল ইসলাম।

এদিকে দিনাজপুর আব্দুর রহিম মেডিকেল কেলেজ হাসপাতালে নিহত সুরাইয়ার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলমান আছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

আরও পড়ুন

স্থানীয় বাসিন্দা ও নির্বাচন–সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল ঠাকুরগাঁও রানীশংকৈল উপজেলার তিনটি ইউপির ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলার বাচোর ইউপির ভাংবাড়ি ভিএফ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ ও গণনা শেষে ফলাফল ঘোষণা করা হয়। ঘোষিত ফলে ইউপি সদস্য পদে বাবুল হোসেন ৪৯৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। অপর ৩ প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর মধ্যে আজাদ আলী ৪৪২ ভোট, খালেদুর রহমান ২৪৫ ভোট ও কামালউদ্দিন ২১৩ ভোট করে পেয়েছেন। কিন্তু ওই ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেন পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকেরা। পরে তাঁরা লাঠিসোঁটা নিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর হামলা চালায়।

এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাদের কাঁদানো গ্যাস ছোঁড়ে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। এতে কাজ না হওয়ায় হামলাকারীদের লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে পুলিশ। সে সময় মা মিনারা বেগমের কোলে থাকা সুরাইয়া মাথায় আঘাত পেয়ে নিহত হয়। তবে গুলি না অন্য কিছুতে সুরাইয়া আঘাত পেয়েছে তা নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ।

যোগাযোগ করা হলে ভোটকেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মো. খতিবর রহমান বলেন, ফলাফল ঘোষণার পর ভোটকেন্দ্র থেকে বের হওয়ার সময় বিক্ষুব্ধ কিছু লোক নির্বাচন কর্মকর্তাদের দিকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। তাঁদের নিবৃত্ত করতে পুলিশ কাঁদানো গ্যাস ও গুলি ছোঁড়ে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক রামকৃষ্ণ বর্মণ বলেন, ‘আমরা তদন্ত শুরু করছি। আগে আমরা নিজেরা জানার চেষ্টা করছি। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানানো হবে।’