আতঙ্ক কমে আসায় আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়েছেন ঘুমধুমের বাসিন্দারা

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার উত্তর ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণি কার্যক্রম চলছে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায়ছবি: প্রথম আলো

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার উত্তর ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে আর কেউ নেই। সেখানে আশ্রয় নেওয়া বাসিন্দারা গতকাল বুধবার বিকেলের মধ্যে চলে যান। ফলে আজ বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়ে পাঠদান চলছে।

গত মঙ্গলবার দুপুরে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু-ঘুমধুম সীমান্তঘেঁষা ঘুমধুম ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের লোকজনকে সরিয়ে নেয় বান্দরবান জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন সরেজমিনে তুমব্রু-ঘুমধুম সীমান্ত পরিদর্শন শেষে সীমান্তঘেঁষা লোকজনকে সরানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। এরপর সেখানকার বাসিন্দাদের উত্তর ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আনা হয়।

আরও পড়ুন

ঘুমধুম ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে উত্তর ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টির অবস্থান। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয়ে নিয়মিত শ্রেণি কার্যক্রম চলছে। প্রধান শিক্ষক দীপন বড়ুয়া প্রথম আলোকে বলেন, গতকালের মধ্যে বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেওয়া সব লোকজন চলে গেছেন। বিদ্যালয়ে সীমান্তঘেঁষা এলাকার আতঙ্কিত লোকজন অবস্থান করায় মঙ্গলবার শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ ছিল।

ঘুমধুমের পশ্চিমকূলের বাসিন্দা কুলছুমা বেগম তাঁর দুই শিশুসন্তান নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়েছিলেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, আশ্রয়কেন্দ্রে থাকতে ভালো লাগে না। বাচ্চারা ছোট। রাতে তীব্র শীতে তাদের অবস্থা কাহিল হয়ে গিয়েছিল। এ ছাড়া গত দুই দিন এলাকায় গোলাবারুদ পড়েনি।

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মিয়ানমারের তুমব্রু রাইট ক্যাম্প ও ঢেঁকিবনিয়া সীমান্তচৌকি দখলকে ঘিরে সে দেশের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সঙ্গে বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) তুমুল সংঘর্ষ শুরু হয় গত শনিবার দিবাগত রাত থেকে। এর পর থেকে ঘুমধুমের পশ্চিমকূল, উত্তরপাড়া, হিন্দুপাড়া, কোনারপাড়া, জলপাইতলী, মধ্যমপাড়া, মণ্ডলপাড়া, নয়াপাড়া এলাকার মানুষজন ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে শুরু করেন। সর্বশেষ মঙ্গলবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে মাইকিং করে ঝুঁকির মধ্যে থাকা লোকজনকে সরিয়ে উত্তর ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।

আরও পড়ুন

ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য দিল মোহাম্মদ ভুট্টো প্রথম আলোকে বলেন, সীমান্ত এলাকার ২৭ পরিবারের ১৩৭ জন আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়েছিলেন। সীমান্ত পরিস্থিতি শান্ত হয়ে আসায় সেখান থেকে আশ্রিত ব্যক্তিরা বুধবার চলে যান।

ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ প্রথম আলোকে বলেন, লোকজন ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র থাকতে চান না, বিশেষ করে আশ্রয়কেন্দ্রে। পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে এলে লোকজন এলাকায় চলে আসেন। অনেকে আত্মীয়স্বজনের বাড়িতেও চলে যান। অনেকে খেতখামারের কাজে লেগে যান। চেয়ারম্যান বলেন, ঘুমধুম সীমান্ত এখন শান্ত। মানুষের মধ্যেও আতঙ্ক অনেকটা কমে এসেছে।

আরও পড়ুন