গাজীপুরের শ্রীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে অসুস্থ বাঘটি মারা গেছে। আজ বুধবার সন্ধ্যায় পার্কের প্রকল্প পরিচালক মো. ইমরান আহমেদ বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন।
প্রকল্প পরিচালক মো. ইমরান আহমেদ বলেন, আজ সকালে বাঘটির মৃত্যু হয়। বাঘটির বয়স হয়েছিল ১৪ বছর। এ ঘটনায় শ্রীপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।
পার্ক কর্তৃপক্ষ জানায়, দেড় মাস ধরে গুরুতর অসুস্থ স্ত্রী বাঘটির চিকিৎসা চলছিল। আজ সকালে বাঘটির শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে পড়ে। একপর্যায়ে তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পর নিয়মানুযায়ী বাঘের মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়। ময়নাতদন্ত শেষে শরীরের বিভিন্ন অংশের নমুনা সংগ্রহ করে দেশের বেশ কয়েকটি পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে। পরে পার্কের ভেতরে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় মাটিচাপা দেওয়া হয়।
সাফারি পার্ক সূত্রে জানা গেছে, পার্ক প্রতিষ্ঠার শুরুর দিকে ২০১৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে বেশ কয়েকটি বাঘ আনা হয়েছিল। এর মধ্যে আজ মারা যাওয়া বাঘটি দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিল। ৬ ফেব্রুয়ারি বাঘটি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। ধীরে ধীরে খাবার গ্রহণ কমিয়ে দেয়। এরপর ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে বাঘটি পুরোপুরি খাবার গ্রহণ বন্ধ করে দেয়। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মাধ্যমে তার চিকিৎসা করা হয়। পরবর্তী সময়ে ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ৬ মার্চ পর্যন্ত বাঘটি অল্প অল্প খাবার খায়। কিন্তু ৭ মার্চ থেকে আবার খাবার গ্রহণ বন্ধ করে দেয়। রাজধানীর কেন্দ্রীয় ভেটেরিনারি হাসপাতালের সাবেক প্রধান ভেটেরিনারি কর্মকর্তা এ বি এম শহীদুল্লাহ সরেজমিনে অসুস্থ বাঘটিকে পর্যবেক্ষণ করেন। তাঁর তত্ত্বাবধানে বাঘের চিকিৎসা চলছিল। চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ বাঘটি মারা যায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাফারি পার্কের এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, বিশেষজ্ঞ বন্য প্রাণী চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে দেখেছেন, বাঘটি ট্রিপোনোসোমিয়াসিস, লিভার ডিজিজ ও যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত ছিল। পার্কে ছয়টি স্ত্রী ও তিনটি পুরুষ মিলিয়ে মোট বাঘের সংখ্যা ছিল ৯। বর্তমানে কমে দাঁড়িয়েছে আটটিতে। এর মধ্যে বিরল প্রজাতির একটি সাদা বাঘ আছে। তিনি আরও বলেন, বাঘের আয়ুষ্কাল ১৪–১৮ বছর।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, বাঘটির মৃত্যুর বিষয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করেছে পার্ক কর্তৃপক্ষ। সাফারি পার্কের প্রকল্প পরিচালক মো. ইমরান আহমেদ বলেন, বাঘটি দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থতায় ভুগছিল। বিশেষজ্ঞ দলের তত্ত্বাবধানে বাঘটির চিকিৎসা করা হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাঘটি বাঁচানো যায়নি।