তিস্তার পানি কমেছে, স্বস্তি ফিরলেও ভাঙনের শঙ্কা

পানির তীব্র স্রোতে রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার পূর্ব ইচলি এলাকায় মাটির বাঁধ ভেঙে গেছে
প্রথম আলো ফাইল ছবি

রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা ও লালমনিরহাটে তিস্তা নদীর পানি কমেছে। এতে তিস্তা পারের মানুষের মনে স্বস্তি ফিরলেও নদীভাঙনের আশঙ্কায় আছেন তাঁরা। আজ শনিবার সকালে রংপুরের কাউনিয়া ও লালমনিরহাটের ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার অনেক নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।

আজ সকাল থেকে রংপুরের আকাশ কখনো পরিষ্কার হয়, আবার কখনো মেঘাচ্ছন্ন দেখা যাচ্ছে। সকাল ৯টার দিকে রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে আজ সকাল ৯টা পর্যন্ত রংপুরে বৃষ্টি হয়েছে ১০ মিলিমিটার। কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি ৪৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। লালমনিরহাটের ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৮৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

পানি কমতে শুরু করায় রংপুরের গঙ্গাচড়া, কাউনিয়া ও পীরগাছা উপজেলার নদীর তীরবর্তী মধ্যে ভাঙন আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এবার দুই মাসের ব্যবধানে ছয় দফায় নদীর পানি ওঠানামা করেছে।

সকালে তিস্তা পারের স্থানীয় কৃষক আকবর হোসেন বলেন, উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢল নামার সময় পানির তীব্র স্রোতে গঙ্গাচড়ার লক্ষ্মীটারি ইউনিয়নের ইচলি এলাকায় মাটির বাঁধ ভেঙে গেছে। বাঁধ ভাঙলেও মুহূর্তে পানি কমে যাওয়ায় আমন ধানের খেত ঠিক আছে।  

গঙ্গাচড়ার লক্ষ্মীটারি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবদুল্লাহেল হাদী বলেন, যেভাবে উজানের পাহাড়ি ঢল নেমে আসার কথা ছিল, কিন্তু সেভাবে পানি আর আসেনি। তবে এলাকার লোকজন প্রস্তুত ছিল।  

গঙ্গাচড়ার তিস্তা নদী তীরবর্তী কোলকোন্দ ইউনিয়নের বিনবিনা, উত্তর চিলাখাল, সাউথপাড়া, মটুকপুর, গজঘণ্টা ইউনিয়নের ছালাপাক, মহিষাসুর, রমাকান্ত, আলালচর, জয়দেব এলাকা এবং নোহালী ও আলমবিদিতর এই দুই ইউনিয়নের মানুষের মধ্যে উৎকণ্ঠা থাকলেও তা কেটে গেছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড রংপুর কার্যালয়ের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আহসান হাবিব বলেন, ভারতের কোচবিহার, শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং, কালিমপংসহ আরও কিছু এলাকায় ভারী বৃষ্টি হয়েছে। সেই পানি নেমে আসায় তিস্তার পানি বাড়লেও পানি দ্রুত নেমে গেছে। আপাতত পানি বাড়ার কোনো সতর্কতা নেই।

আরও পড়ুন

এদিকে পাউবোর বরাত দিয়ে প্রথম আলোর গাইবান্ধা প্রতিনিধি বলেন, গাইবান্ধায় তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘট নদীর পানি কমেছে। তবে করতোয়া নদীর পানি বেড়েছে। গতকাল দুপুর ১২টা থেকে আজ দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘটায় তিস্তার পানি সুন্দরগঞ্জ পয়েন্টে ২ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ফুলছড়ি উপজলার তিস্তামুখ পয়েন্টে ৩৩ সেন্টিমিটার, ঘাঘট নদীর পানি জেলা শহরের নতুন ব্রিজ পয়েন্টে ১৯ সেন্টিমিটার কমেছে। একই সময়ে করতোয়ার পানি গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কাটাখালী পয়েন্টে ৮ সেন্টিমিটার বেড়েছে।

লালমনিরহাট প্রতিনিধি ও কুড়িগ্রামের সংবাদদাতা জানিয়েছেন, বর্তমানে তিস্তার নদীর পানি বিপৎসীমার বেশ নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে তিস্তা পারের মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে। তবে কোথাও কোথাও ভাঙনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

আরও পড়ুন