পটুয়াখালীতে সংঘর্ষের ঘটনায় এবার আওয়ামী লীগ নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে বিএনপির মামলা

সংঘর্ষের সময় পটুয়াখালী জেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয় থেকে সিঙ্গারা পয়েন্ট পর্যন্ত পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়
ফাইল ছবি: প্রথম আলো

পটুয়াখালীতে বিএনপির সঙ্গে যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের সংঘর্ষের ঘটনার ১৬ দিন পর আরেকটি মামলা হয়েছে। জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে গত মঙ্গলবার পটুয়াখালী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এই মামলার আবেদন করেন জেলা বিএনপি কার্যালয়ের অফিস সহকারী মো. মোস্তাফা আকন। আদালতের বিচারক মো. আশিকুর রহমান মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্ত করে ২১ জুন প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলায় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের ৪১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ১৫০ থেকে ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এই মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মজিবুর রহমান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

উল্লেখ্য, ২০ মে সকালে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে জেলা বিএনপি জনসমাবেশ আহ্বান করে। এদিন জেলা যুবলীগের পক্ষ থেকে শান্তি সমাবেশ ঘোষণা করা হয়। পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘিরে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের কারণে বিএনপির দলীয় কার্যালয় থেকে সিঙ্গারা পয়েন্ট পর্যন্ত পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এ সময় জেলা বিএনপির কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়। দেড় ঘণ্টাব্যাপী চলা এ সংঘর্ষের একপর্যায়ে পুলিশ তিনটি কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

আরও পড়ুন

ঘটনার দিন রাতেই প্রথম মামলা করেন জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক রায়হান হোসেন। পরদিন সকালে অপর মামলাটি করেছেন জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাসির উদ্দিন। ওই দিন রাতে পুলিশের পক্ষ থেকে অপর একটি মামলা করেন পটুয়াখালী সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) বিপুল হালদার। এই তিন মামলায় মোট ৬৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৭০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

আরও পড়ুন

আদালতে বিএনপির করা মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ২০ মে বনানী এলাকায় জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ ছিল। মুসলিমপাড়া থেকে বিএনপির নেতা–কর্মীরা সমাবেশস্থলে আসতে থাকেন। এতে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে মারধর করতে থাকে। এ সময় কলেজ রোড দিয়ে বিএনপির নেতা–কর্মীদের আরেকটি দল সমাবেশস্থলে আসার পথে বনানী, টিঅ্যান্ডটি ঈদগাহের সামনে আওয়ামী লীগের হামলার শিকার হয়। তাদের দলীয় সমাবেশ পণ্ড করার জন্য এভাবে কাঠপট্টি, লোহালিয়া খেয়াঘাট, শাহীন হোটেল মোড়, কলের পুকুরপাড় এলাকায় বিএনপির নেতা–কর্মীদের ওপর হামলা করা হয়। এ ছাড়া বিএনপির কার্যালয় ভাঙচুরসহ বিভিন্ন পয়েন্টে হামলা চালিয়ে সন্ত্রাসীরা ২ লাখ ৪২ হাজার টাকার মালামাল ছিনিয়ে নেয় বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়। এ হামলার ঘটনায় পথচারীসহ বিএনপির দুই শতাধিক নেতা–কর্মী আহত হন বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

মামলার বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মান্নান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আসলে যুবলীগের শান্তি সমাবেশে বিএনপি হামলা করে আমাদের নেতা–কর্মীদের জখম করল। আমাদের পক্ষ থেকে মামলা করেছি। ঘটনার ১৬ দিন পর ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে বিএনপি মিথ্যা কাউন্টার মামলা করেছে।’