চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ, জৈন্তাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা

(বাঁ থেকে) জুবায়ের আহসান, মেহেদী হাসান, আলী হোসেন ও নেহাল পাল
ছবি: সংগৃহীত

সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলায় প্রাইভেট কার পুকুরে পড়ে ছাত্রলীগের চার কর্মী নিহত হওয়ায় চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ তুলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মামলা হয়েছে। গতকাল শনিবার রাতে জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. সালাহ্উদ্দিন মিয়া বাদী হয়ে মামলাটি করেন। মামলায় ২৫০ থেকে ৩০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

এদিকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভাঙচুর ও দুর্ঘটনায় চার তরুণ নিহতের ঘটনায় একাধিক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তিন সদস্যের এবং জেলা প্রশাসন পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ইমরুল হাসানকে প্রধান করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট কার্যালয়ের বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজুল ইসলাম।

এদিকে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ছাত্রলীগ কর্মী নেহাল পালের বাবা রনদিপ পাল বাদী হয়ে গতকাল রাতে জৈন্তাপুর থানায় অপমৃত্যুর মামলা করেছেন।

গত শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের জৈন্তাপুরের ৪ নম্বর বাংলাবাজার রাংপানি এলাকায় প্রাইভেট কার পুকুরের পানিতে ডুবে চার তরুণ মারা যান। তাঁরা হলেন জৈন্তাপুর উপজেলার নিজপাট ইউনিয়নের লামাপাড় গ্রামের জুবায়ের আহসান, পানিহারাহাটি গ্রামের মেহেদী হাসান, জাঙ্গালহাটি গ্রামের আলী হোসেন ও তোয়াসীহাটি গ্রামের নেহাল পাল। নিহত সবার বয়স ২৪ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে। তাঁরা চারজনই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তবে তাঁদের কোনো পদ ছিল না।

আরও পড়ুন

দুর্ঘটনার পর শুক্রবার রাতে চারজনকে উদ্ধার করে জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন স্থানীয় লোকজন। তাঁরা চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগে হাসপাতাল ও স্টাফ কোয়ার্টার ভাঙচুর করেন। এ সময় হাসপাতালের পার্কিংয়ে থাকা সরকারি জিপ গাড়িতে আগুন ও অ্যাম্বুলেন্স ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে।

চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. সালাহ্উদ্দিন মিয়া বলেন, চারজনকেই মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। হাসপাতালে নিয়ে আসার সময় জরুরি বিভাগের চিকিৎসক উপস্থিত ছিলেন। প্রথমে দুজনকে নিয়ে আসা হয়। পরে প্রায় ১৫ মিনিট পর আরও দুজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তিনি আরও বলেন, হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স চালকের পদ শূন্য, এরপরও তাঁরা ওই অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে সিলেটে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। বিষয়টি বুঝিয়ে বলার পরও উত্তেজিত হয়ে তাঁরা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটিয়েছেন।
জৈন্তাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. তাজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, দুর্ঘটনা ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভাঙচুরের ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। ভাঙচুরের ঘটনায় তদন্ত করে জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনা হবে।

আরও পড়ুন