ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যালয়ের মেরামত করছেন প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা

বিদ্যালয়ের সড়ক ও মাঠের সংস্কারকাজ শুরু করেন প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। শনিবার ফরিদপুর সদরের সাদীপুর উচ্চবিদ্যালয়ে
প্রথম আলো

বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষার জন্য ফেসবুকে একটি গ্রুপ খুলেছিলেন পাঁচ মাস আগে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা শিক্ষার্থীরা আছেন ওই গ্রুপে। বন্যায় বিদ্যালয়ের ক্ষতি হওয়ার কথা সে গ্রুপেই জানিয়েছিলেন কেউ। এরপরই উদ্যোগের শুরু। প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা মিলে এখন বিদ্যালয় ও এর সামনের সড়ক সংস্কার করছেন। এতে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা সবাই ফরিদপুরের সদর উপজেলার আলিয়াবাদ ইউনিয়নের সাদীপুর উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

গত শনিবার সকাল থেকে ওই মেরামতকাজ শুরু হয়। ওই বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা জানান, গত বন্যায় ফরিদপুর-চরভদ্রাসন সড়কসহ ওই বিদ্যালয় পানিতে নিমজ্জিত হয়। এর ফলে বিদ্যালয়ে প্রবেশের পথসহ ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ছাড়া বন্যার পানির স্রোতের কারণে বিদ্যালয়ের মাঠে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়। এসব মেরামতকাজ করা হচ্ছে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে।

এ কাজের সমন্বয় করছেন ওই বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী আবদুল আওয়াল (৪৬)। তিনি জানান, বিদ্যালয়টি অনেক আগে স্থাপিত হলেও আর্থিক সংকট চরম। এ সংস্কারের জন্য বিদ্যালয়ের বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিষদের সভাপতি শেখ সাদীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, স্কুল ফান্ডে কোনো টাকা নেই। তাই স্কুলের উদ্যোগে এ সংস্কারকাজে হাত দেওয়া সম্ভব নয়।

আবদুল আওয়াল আরও জানান, ফেসবুকভিত্তিক ‘সাদীপুর উচ্চবিদ্যালয় এক্স স্টুডেন্ট গ্রুপ’ নামের গ্রুপটির সদস্যসংখ্যা আট শতাধিক। ওই গ্রুপের সদস্যদের মাধ্যমে টাকা সংগ্রহ করে সংস্কারকাজ শুরু হয়েছে।

গ্রুপের সদস্য নাজমুল হাসান (২১) জানান, গত শনিবার সকাল থেকে বিদ্যালয়ে প্রবেশের ক্ষতিগ্রস্ত সড়কটি মেরামতের মধ্য দিয়ে কাজ শুরু হয়। এরপর পর্যায়ক্রমে সড়কের পাশের ক্ষতিগ্রস্ত ভবন ও মাঠে মাটি ভরাটের কাজ করা হবে।

সাদীপুর উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুশীল চন্দ্র শীল বলেন, বিদ্যালয়টি ১৯৮১ সালে স্থাপিত হয়। সাড়ে পাঁচ বিঘা জমির ওপর ফরিদপুর-চরভদ্রাসন সড়কের পশ্চিম পাশে বিদ্যালয়টির অবস্থান। বর্তমানে বিদ্যালয়ের শিক্ষকের সংখ্যা ১৭ ও শিক্ষার্থী ছয় শতাধিক।

আলিয়াবাদ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আকতারুজ্জামান বলেন, বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের এ উদ্যোগ একটি উদাহরণ সৃষ্টিকারী ঘটনা। বিদ্যালয় ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যে সব সম্পর্ক শেষ হয়ে যায় না এবং বিদ্যালয়ের ও শিক্ষার মান উন্নয়নে একটি দায়িত্ব থাকে, প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের এ উদ্যোগ সে সত্যই তুলে ধরে।