খাল ভরাট করায় ১০ লাখ টাকা জরিমানা

ট্রাক রাখা ও কার্যালয় বানাতে ভরাট করা হচ্ছে খাসজমি। সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের মেড্ডা এলাকায়।
ছবি: প্রথম আলো

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রাক রাখা ও সংগঠনের কার্যালয় বানাতে খাসজমি ভরাটের অভিযোগে জেলা ট্রাক মালিক সমিতিকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম অঞ্চলের কার্যালয়ের পরিচালক মহিদুল আলম গতকাল সোমবার এই জরিমানা করেন।

মহিদুল আলম স্বাক্ষরিত একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি গতকাল রাতে প্রথম আলোর হাতে এসেছে। ওই বিজ্ঞপ্তি সূত্রে জানা গেছে, নানা অভিযোগে গতকাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মোট ৫টি প্রতিষ্ঠান ও ১টি সংগঠনকে ১১ লাখ ১০ হাজার টাকা জরিমানা করে পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম কার্যালয়। এর মধ্যে রয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ট্রাক মালিক সমিতিও। সংগঠনটি জেলা শহরের মেড্ডা এলাকায় খাসখতিয়ানভুক্ত একটি খালের জায়গায় আবর্জনা ও বালু ফেলে ভরাট করছিল। ট্রাক রাখা ও সংগঠনের কার্যালয় বানাতে এই ভরাটের কাজ শুরু করে তারা। এ ঘটনায় জেলা ট্রাক মালিক সমিতির পক্ষে সংগঠনের সভাপতি শেখ মো. মহসিনকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

আরও পড়ুন

পরিবেশ অধিদপ্তর ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, মেড্ডা এলাকার কোকিল টেক্সটাইল মিলস লিমিটেডের সামনের খাসজলাভূমি দখল নিতে ময়লা-আবর্জনা ফেলে ভরাট করছিলেন জেলা ট্রাক মালিক সমিতি ও মোটর ওয়ার্কশপ মেকানিক ইউনিয়নের নেতারা। এ কাজে ব্যবহার করা হচ্ছিল পৌরসভার ময়লা-আবর্জনা ও বালু। বিষয়টি নিয়ে ১৭ জুন প্রথম আলোতে ‘খাসজমি দখল করে ভরাট’ শিরোনামে একটি সচিত্র প্রতিবেদন ছাপা হয়। এরপরও পরিবেশ অধিদপ্তর জরিমানা করল। জরিমানার আদেশ প্রতিপালনে ব্যর্থ হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে ময়লা-আবর্জনা ফেলে মেড্ডার খালের ভরাট করা অংশ দখলমুক্ত করার বিষয়ে কোনো নির্দেশনা নেই তাতে।

জানতে চাইলে পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক নুরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘জেলা ট্রাক মালিক সমিতিকে ১০ লাখ টাকা জরিমানার বিষয়টি আমিও জেনেছি। তবে আমরা এখনো আদেশ পাইনি। অনলাইনে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পেয়েছি।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভরাট করা অংশ থেকে ময়লা-আবর্জনা ও বালু সরিয়ে খালটি অবমুক্ত করার বিষয়েও সামনে আদেশ আসবে।

জরিমানা হওয়া অপর পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে চারটিই ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নন্দনপুর বিসিক শিল্পনগরীতে অবস্থিত। এর মধ্যে মেসার্স মুন্নি কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজকে ২০ হাজার টাকা, আলম কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজকে ২০ হাজার টাকা, আরমান কেমিক্যাল অ্যান্ড স্যুপ ইন্ডাস্ট্রিজকে ২০ হাজার টাকা, আরশি মেটালকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে শর্ত ভাঙার অভিযোগ রয়েছে। আর ছাড়পত্র না থাকায় নবীনগর উপজেলার মেসার্স প্রভাতী ব্রিকসকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

বিষয়টি মুঠোফোনে নিশ্চিত করেছেন পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম অঞ্চল কার্যালয়ের পরিচালক মুফিদুল আলম। জেলা ট্রাক মালিক সমিতিকে জরিমানার কথা নিশ্চিত করে প্রথম আলোকে তিনি বলেন, খালের ভরাট অংশ আগের অবস্থায় ফেরাতে ট্রাক মালিক সমিতি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।