তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার

প্রতীকী ছবি

নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলায় তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আসাদুল হক চৌধুরী ওরফে শাকিলকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ঘটনার দুই মাসের বেশি সময় ধরে পলাতক থাকার পর আজ শুক্রবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার একটি রেস্তোরাঁ থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার আসাদুল হক চৌধুরী উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের উত্তর পাড়া এলাকার বাসিন্দা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল হক চৌধুরীর ছেলে।

জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মোহাম্মদ শফিউর রহমান বলেন, ভুক্তভোগী ওই তরুণীর সহযোগিতায় ও মুঠোফোনে কলের সূত্র ধরে সরাইল উপজেলার বিশ্বরোড–সংলগ্ন একটি রেস্টুরেন্ট থেকে আসাদুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে বিকেলে নরসিংদীর আদালতের মাধ্যমে তাঁকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

মামলার এজাহার সূত্র জানায়, ২২ অক্টোবর বিকেল চারটার দিকে ছাত্রলীগের নেতা আসাদুল হক ওই তরুণীর (১৮) মুঠোফোনে কল করে তাঁকে বিয়ে করার জন্য রায়পুরা উপজেলা শহরের একটি মিলনায়তনে আসতে বলেন। আসাদুলের কথামতো রাত ৯টার দিকে বিয়ের প্রস্তুতি নিয়ে ওই তরুণী সেখানে আসেন। আসার পর একটি কক্ষে নিয়ে আসাদুল কেক ও কোমল পানীয়ের সঙ্গে তাঁকে নেশাজাতীয় দ্রব্য পান করান। কোমল পানীয় খাওয়ার পরই তরুণীর শরীরে ঝিমুনি আসে। এমন অবস্থায় তরুণীকে ধর্ষণ করেন আসাদুল। কান্নাকাটি করলে তরুণীকে ছাদের ওপরের একটি কক্ষে আটকে রাখা হয়। এ সময় তাঁর চিৎকার শুনে আশপাশে থাকা লোকজন জাতীয় জরুরি সেবার ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিয়ে বিষয়টি জানান। এরপর রায়পুরা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই তরুণীকে উদ্ধার করে। আর অভিযুক্ত আসাদুল হক ঘটনাস্থল থেকে কৌশলে পালিয়ে যান।

ঘটনার পরদিন দুপুরে ওই তরুণী নিজেই বাদী হয়ে ছাত্রলীগের নেতা আসাদুল হক চৌধুরীসহ দুজনকে আসামি করে রায়পুরা থানায় মামলা করেন। তরুণীর অভিযোগ, ‘ছয় মাস ধরে আসাদুলের সঙ্গে আমার প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। ওই দিন রাত ৯টার দিকে আমাকে বিয়ে করার কথা বলে ওই অডিটরিয়ামে নেওয়া হয়। সেখানে গিয়ে কাজি দেখতে না পেয়ে আমি আসাদুলের কাছে কাজি কোথায় জানতে চাই। সে আমাকে বলে, কাজি আনতে লোক পাঠানো হয়েছে। এরই মধ্যে আমাকে নেশাজাতীয় দ্রব্যমিশ্রিত কোল্ড ড্রিঙ্কস খেতে দেয়। এতে আমার ঘুম ঘুম ভাব হয়। এই সুযোগে সে আমাকে ধর্ষণ করেছে।’

পুলিশ ও ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হওয়ার ২২ দিন পর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আসাদুল হক চৌধুরী ওরফে শাকিলকে বহিষ্কার করে জেলা ছাত্রলীগ। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হাসিবুল হাসান ও সাধারণ সম্পাদক আহসানুল ইসলাম স্বাক্ষরিত ওই বহিষ্কারাদেশে বলা হয়, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে রায়পুরা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আসাদুল হককে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

আরও পড়ুন