সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে মো. রায়হান আহমেদকে (৩৪) নির্যাতন করে হত্যার ঘটনায় বরখাস্ত পুলিশ কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাসকে দ্বিতীয় দফায় রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। আজ রোববার দুপুরে সিলেটের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমান শুনানি শেষে তাঁর তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে গত মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) টিটু চন্দ্র দাসকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়েছিল মামলার তদন্তকারী সংস্থা পিবিআই (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন)। রিমান্ড শেষে আজ দুপুরে তাঁকে আদালতে হাজির করা হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পরিদর্শক মহিদুল ইসলাম জানান, পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার জন্য রাজি হয়েছিলেন টিটু চন্দ্র দাস। তবে আদালতে আসার পর তিনি জবানবন্দি দিতে অস্বীকৃতি জানান। পরে তাঁকে দ্বিতীয় দফায় পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন জানানো হয়। আদালত শুনানি শেষে টিটুর তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
১০ অক্টোবর রাতে সিলেট নগরের আখালিয়া এলাকার নেহারিপাড়ার বাসিন্দা রায়হানকে কোতোয়ালির বন্দরবাজার ফাঁড়িতে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করা হয়। পরের দিন ভোরে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় ওই দিন রাতে কোতোয়ালি থানায় রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে মামলা করেন। মহানগর পুলিশের একটি অনুসন্ধান কমিটি তদন্ত করে ১২ অক্টোবর ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেনসহ চারজনকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করে।
এ পর্যন্ত দুজন সাময়িক বরখাস্ত হওয়া কনস্টেবলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। টিটু ছাড়াও গ্রেপ্তার আরেক আসামি হারুনকে শনিবার রাতে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পিবিআই। তবে রায়হানের মৃত্যুর ঘটনায় মূল অভিযুক্ত পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আকবর হোসেন এখনো পলাতক। এসআই আকবরসহ অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে রোববার সকাল থেকে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে অনশন শুরু করেছেন রায়হানের মা ছালমা বেগম। রায়হানের মায়ের এই অনশন কর্মসূচির সঙ্গে বিভিন্ন এলাকার মানুষ ছাড়াও সামাজিক সংগঠনের সদস্যরা একাত্ম হয়েছেন। অনশনে অংশ নেওয়া সবার মাথায় কাফনের কাপড়সদৃশ সাদা কাপড় ছিল।