ধরা পড়ার পর হত্যার কথা স্বীকার করলেন পলাতক যুবক

সিলেটের বিয়ানীবাজারে স্কুলছাত্রীকে কুপিয়ে হত্যা করছেন বলে স্বীকার করেছেন নাজিম উদ্দিন (২৩)। পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পর আজ মঙ্গলবার রাতে
সংগৃহীত

সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার শেওলা ইউনিয়নের বালিঙ্গা গ্রামে নিজ বাড়ির কক্ষে স্কুলছাত্রী নাজমিন আক্তারকে (১৬) কুপিয়ে হত্যা করা পলাতক যুবক নাজিম উদ্দিনকে (২৩) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ঘটনার পর বিয়ানীবাজারের আঙ্গারুলি গ্রামে বোনের বাড়িতে আত্মগোপন করেছিলেন নাজিম। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে এলাকাবাসীকে নিয়ে নাজিমকে আটক করে।

বিয়ানীবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিল্লোল রায় প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, হত্যা করে দা রেখে পালিয়ে যান নাজিম। বাড়িতে থাকা দুই নারী সদস্য নাজিমের পালিয়ে যাওয়া দেখে ফেলেন। এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার পর দুপুর ১২টা থেকে টানা সাত ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে নাজিমের অবস্থান নিশ্চিত করে পুলিশ। পুলিশ সুপার ও সার্কেল এএসপির নির্দেশনায় এলাকাবাসীকে নিয়ে নাজিমকে আটক করা হয়।

আটকের পর নাজিম পুলিশের কাছে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে নাজিম বলেন, মেয়েটিকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন তিনি। রাজি না হওয়ায় রাগের মাথায় কুপিয়ে হত্যা করেন। এ ঘটনায় হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন ওসি।

আরও পড়ুন

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, দুপুরবেলা বাড়ির একটি কক্ষে বসে টেলিভিশন দেখার সময় অতর্কিত আক্রমণ করে নাজমিনকে কুপিয়ে হত্যা করেন নাজিম। পাশের কক্ষে রান্নাবান্নায় ব্যস্ত ছিলেন তার মা ও ভাবি। হঠাৎ চিৎকার ও মেঝেতে ভারী কিছু পড়ার শব্দ শুনে তাঁরা দুজন টেলিভিশনের কক্ষে গিয়ে দেখেন মেয়েটি রক্তাক্ত। এ সময় হাতে থাকা রক্তমাখা দা ফেলে পালিয়ে যান নাজিম।

নিহত স্কুলছাত্রী নাজমিন আক্তার স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি সামসুল হক চৌধুরীর পালিত কন্যা। পড়ত বালিঙ্গা উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণিতে। ওই বাড়িতে আশ্রিত ছিলেন নাজিম।

নিহত স্কুলছাত্রীর নাম নাজমিন আক্তার। স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি সামসুল হক চৌধুরী ওরফে কস্তই মিয়ার পালিত কন্যা ছিল সে। পড়ত বালিঙ্গা উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণিতে। পরিবারে সামসুল হকের স্ত্রী, এক ছেলে ও ছেলের স্ত্রী রয়েছেন। ওই বাড়িতে আশ্রিত ছিলেন নাজিম। ঘটনার সময় বাড়িতে কোনো পুরুষ ছিল না। নাজমিনের পালিত মা ও ভাবি দুপুরের রান্নাবান্না করতে পেছনের একটি কক্ষে ছিলেন। নাজমিন তখন একাই টেলিভিশন দেখছিলেন।

ওই বাড়ির প্রতিবেশী ও শেওলা ইউপির সদস্য আবুল কালাম খান শেখ প্রথম আলোকে বলেন, নাজমিনকে বিয়ে দিতে চেয়েছিল তার পরিবার। সম্প্রতি একটি পক্ষ কনে দেখে বিয়ের দিনক্ষণ চূড়ান্ত করেছিল। এ সময়ই ঘটনাটি ঘটল।