নদ থেকে বালু না তোলার শর্তে খননযন্ত্র দুটি নিলামে বিক্রি

সুনামগঞ্জের ধরমপাশা উপজেলার মনাই নদ থেকে জব্দ করা সেই দুটি ড্রেজার মেশিন (খননযন্ত্র) অবশেষে উন্মুক্ত নিলামের মাধ্যমে বিক্রি করেছে উপজেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার মধ্যনগর থানা প্রাঙ্গণে উন্মুক্ত নিলাম ডাকের আয়োজন করা হয়।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, উন্মুক্ত এই নিলাম ডাকে তিনজন অংশ নেন। এই তিনজনের মধ্যে সাইবুর রহমান নামের এক ব্যক্তি সর্বোচ্চ দরদাতা নির্বাচিত হন। ওই ব্যক্তি ড্রেজার মেশিন দুটি দিয়ে নদ থেকে বালু উত্তোলন করবেন না বলে লিখিতভাবে অঙ্গীকার করেন। তিনি ৩৭ হাজার ৫০০ টাকা পরিশোধ করার পর ওই মেশিন দুটি তাঁর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

নিলামে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মধ্যনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ আল মামুন, উপপরিদর্শক (এসআই) দেলোয়ার হোসেন, ইউএনওর কার্যালয়ের অফিস সহকারী (নাজির) আবুল হাসান, মধ্যনগর ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ের অফিস সহায়ক রনদা চক্রবর্তী প্রমুখ।

উপজেলা প্রশাসন ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বংশীকুণ্ডা বাজারের দক্ষিণ পাশে মনাই নদে প্রায় দুই মাস ধরে বংশীকুণ্ডা দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আজিম মাহমুদ ও ওই ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপির সাবেক সদস্য আজিবুর রহমান মিলে ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে বালু তুলছিলেন। এতে নদ–সংলগ্ন ফসলি জমির ক্ষতি হওয়ায় ভুক্তভোগী দুজন কৃষক গত ৩০ জুলাই ইউএনওর কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগ পেয়ে গত ১১ আগস্ট অভিযান চালিয়ে ড্রেজারের মালিক সাজু মিয়াকে (৩৫) আটক করা হয়। এ ছাড়া নদে থাকা দুটি ড্রেজার মেশিন জব্দ করে তা ইউপি চেয়ারম্যান আজিম মাহমুদের জিম্মায় রাখা হয়। পরে সাজু ভবিষ্যতে এমন কাজ করবেন না বলে লিখিত অঙ্গীকার করলে মুক্তি পান।

এদিকে টানা ১৯ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর জব্দ করা সেই ড্রেজারগুলো দিয়ে গত ১২ আগস্ট সকাল থেকে ওই নদে বালু উত্তোলনের কাজ শুরু করা হয়। প্রথম আলোর অনলাইনে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে বিকেলে বালু উত্তোলন বন্ধ করা হয়। এর পাঁচ দিন পর ১৮ আগস্ট বেলা দুইটা থেকে আবার বালু উত্তোলন শুরু হয়। সেই খবরও প্রথম আলোয় ছাপা হলে ১৯ আগস্ট সকালে অভিযান চালিয়ে খননযন্ত্রের সঙ্গে সংযুক্ত থাকা পাইপগুলো নষ্ট করে দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। আর খননযন্ত্র দুটি ইউপি চেয়ারম্যানের জিম্মা থেকে উপজেলার মধ্যনগর থানা–পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মুনতাসির হাসান বলেন, উপজেলার মধ্যনগর থানা–পুলিশের জিম্মায় থাকা জব্দকৃত সেই দুটি ড্রেজার মেশিন উন্মুক্ত নিলাম ডাকের মাধ্যমে ৩৭ হাজার ৫০০ টাকা বিক্রয় করা হয়েছে। ওই টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হবে।

আরও পড়ুন