নিখোঁজ পাঁচজনের সন্ধান এখনো মেলেনি

নিখোঁজ ব্যক্তিদের সন্ধানে রাঙ্গাবালীর আগুনমুখা নদীতে চলছে অভিযান।
সংগৃহীত

পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার আগুনমুখা নদীতে স্পিডবোটডুবির ঘটনায় নিখোঁজ পাঁচজন যাত্রীর সন্ধান এখনো মেলেনি। বৈরী আবহাওয়ায় উত্তাল নদীতে ঝড়–বৃষ্টির মধ্যে কোস্টগার্ড ও পুলিশ শুক্রবার দিনভর উদ্ধার অভিযান চালিয়েছে। স্থানীয় ব্যক্তিরাও কয়েকটি ট্রলার নিয়ে নদীতে নিখোঁজদের সন্ধানের চেষ্টা করেছেন। তবে ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও সন্ধান না মেলায় নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিবার উৎকণ্ঠায় রয়েছে।

বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টায় রাঙ্গাবালীর কোড়ালিয়া থেকে ১৭ জন যাত্রী নিয়ে পানপট্টির উদ্দেশে রওনা হওয়া স্পিডবোটটি বৈরী আবহাওয়ার কারণে আগুনমুখা নদীর মাঝামাঝি গিয়ে প্রচণ্ড ঢেউয়ের তোড়ে তলা ফেটে ডুবে যায়। এ সময় যাত্রীরা সাঁতার কেটে ও স্থানীয় ব্যক্তিদের সহযোগিতায় চালকসহ ১৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হলেও পাঁচজন নিখোঁজ রয়ে যান।

পুলিশ জানায়, নিখোঁজ ব্যক্তিদের মধ্যে রাঙ্গাবালী থানার পুলিশ কনস্টেবল মহিবুল্লাহ (৪৫), কৃষি ব্যাংক বাহেরচর শাখার পরিদর্শক মোস্তাফিজুর রহমান (৩৫), বেসরকারি এনজিও আশার খালগোড়া শাখার ঋণ কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির (৩০), গলাচিপার আমখোলার বাসিন্দা হাসান (৩৫) ও বাউফলের কনকদিয়ার বাসিন্দা ইমরান (৩৪) রয়েছেন। হাসান ও ইমরান রাঙ্গাবালীতে বিদ্যুতের লাইনের নির্মাণকাজে এসেছিলেন বলে জানা গেছে।

রাঙ্গাবালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আহম্মেদ বলেন, নিখোঁজ ব্যক্তিদের তালিকা করা হয়েছে। তবে এখনো কারও সন্ধান পাওয়া যায়নি। বৈরী আবহাওয়ার কারণে উদ্ধার অভিযান ব্যাহত হচ্ছে। তবে উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
জেলার বিচ্ছিন্ন উপজেলার রাঙ্গাবালীর যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম নদীপথ। লঞ্চ, ট্রলারের পাশাপাশি দ্রুত যোগাযোগে স্পিডবোট জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কিন্তু প্রয়োজনীয় নিরাপত্তাসামগ্রী ছাড়াও এই পথে স্পিডবোট চলাচল করছে এবং দুর্ঘটনাও ঘটেছে। এর আগে চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি এই নৌপথে দুটি স্পিডবোটের সংঘর্ষে একটি স্পিডবোট ডুবে দুজন নিখোঁজ হন এবং পরে তাঁদের মরদেহ উদ্ধার হয়েছিল।

রাঙ্গাবালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাশফাকুর রহমান বলেন, এমনিতেই রাঙ্গাবালী একটি দ্বীপ উপজেলা। নৌপথই একমাত্র যোগাযোগব্যবস্থা। তারপরও বৈরী আবহাওয়া আগুনমুখায় স্পিডবোট চালানো ঠিক হয়নি। এ ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পটুয়াখালী নদীবন্দরের সহকারী পরিচালক খাজা সাদিকুর রহমান বলেন, স্পিডবোটডুবির খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে চলে এসেছেন। বরিশাল থেকেও ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে এসেছে। বৈরী আবহাওয়ার কারণে উদ্ধারকাজে কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে। তিনি বলেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের কারণে জেলার অভ্যন্তরীণ সব নৌপথে ৬৫ ফুটের নিচের নৌযান চলাচল বন্ধ রাখার নির্দেশনা ছিল। নির্দেশনা অমান্য করায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মেরিন কোর্টে মামলা করা হবে।

আরও পড়ুন