পদ্মা সেতুর টোল প্লাজা, নদীর তীরের বাঁধ ঘুরে মুগ্ধ মানুষ
পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর থেকে প্রতিদিনই বিপুলসংখ্যক মানুষ সেতু দেখতে আসছেন। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কয়েক হাজার মানুষ পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তে ভিড় করছেন। অনেকে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আসছেন। কেউ আসছেন বন্ধুবান্ধব নিয়ে। অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীদের দলও ঘুরতে আসছে সেতু এলাকায়।
দর্শনার্থীরা জাজিরা এসে টোল প্লাজা ও এর আশপাশে ঘুরে দেখছেন। এরপর তাঁরা চলে যাচ্ছেন পদ্মা সেতুর নদীশাসন প্রকল্পের নাওডোবা ও কাঁঠালবাড়ি এলাকায়। সেখানে দর্শনার্থীরা পদ্মা নদীর তীরে বাঁধের ওপর সময় কাটাচ্ছেন।
গতকাল শুক্রবার বিকেল থেকে পদ্মা সেতুর নদীশাসন প্রকল্প এলাকা ঘুরে দেখা যায়, জাজিরার নাওডোবার সেতুর প্রান্ত থেকে শিবচরের কাঁঠালবাড়ি পর্যন্ত পদ্মা সেতুর নদীশাসন প্রকল্প। নদীর দক্ষিণ তীরে প্রশস্ত বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। পাঁচ কিলোমিটার বাঁধজুড়ে বিভিন্ন বয়সী মানুষের সমাগম দেখা গেছে।
সেতুর সংযোগ সড়কের জমাদ্দার মোড় থেকে ৬ কিলোমিটার উত্তর দিকে কাঁঠালবাড়ি লঞ্চঘাটের সড়ক ধরে যানবাহ নিয়ে নদীশাসন এলাকায় যেতে হয়। অনেক দর্শনার্থী ইঞ্জিনচালিত নৌকায় ও স্পিডবোটে নদীতে ভ্রমণ করছেন। অনেকে নদীতে নেমে গোসল করছেন। বাঁধের ওপরে বিভিন্ন পসরা সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা। পদ্মা সেতুর পশ্চিমে বাঁধটির অবস্থান। বাঁধের ওপর দিয়ে হেঁটে পদ্মা সেতুর কাছে চলে যাওয়া যায়।
স্থানীয় লোকজন বলছেন, সন্ধ্যা নামতে না নামতেই পদ্মা সেতুর ল্যাম্পপোস্টে আলো জ্বলে উঠে। এ সময় সেখানে এক মনোমুগ্ধকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। সেতুর আলোকিত দৃশ্য দেখার জন্য অনেক দর্শনার্থীরা গভীর রাত পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করছেন।
টাঙ্গাইলের একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের দল গতকাল পদ্মা সেতু এলাকায় বেড়াতে এসেছিল। তাঁরা জাজিরা প্রান্তের টোল প্লাজার সামনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ম্যুরাল ও ইলিশের ভাস্কর্য দেখে চলে আসেন নদীশাসন প্রকল্প এলাকায়। সেখানে রাত ৮টা পর্যন্ত অবস্থান করে সেতু পেরিয়ে টাঙ্গাইলের দিকে ফিরে যান।
ওই দলের একজন কায়সার আহম্মেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘ইতিহাসের সাক্ষী হতে উদ্বোধনের দিনে আসতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পরিবহনসংকটের কারণে আসতে পারিনি। তাই ছুটির দিনে বাসে করে সহকর্মীরা সেতু দেখতে এসেছি। আসলেই গর্ব করার মতো অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে। আমাদের সচরাচর এ দিকে আসা হয় না, তাই রাত পর্যন্ত ছিলাম।’
নারায়ণগঞ্জ থেকে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এসেছিলেন আফসার উদ্দিন। তিনি নদীশাসন প্রকল্পের বাঁধে চার ঘণ্টা সময় কাটিয়েছেন। আফসার উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘পদ্মা সেতু দেখার পর পদ্মার তীরে দাঁড়িয়ে নির্মল পরিবেশে সময় কাটিয়েছি। পরিবেশটা পতেঙ্গার মতো লেগেছে। ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে এসেছিলাম তাই তাড়াহুড়ো ছিল না। রাত ১০টা পর্যন্ত বাঁধের ওপর ছিলাম। এমন পরিবেশ ফেলে ফিরতে মন চাইছিল না।’