‘মেয়ের বাগদান করতে এসে ভাইয়ের লাশ নিয়ে ফিরছি’

ভাতিজির বিয়ের বাগদান করতে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নরসিংদী থেকে যশোর যাচ্ছিলেন ফখরুল ভূঁইয়া (৩৮) নামের এক ব্যক্তি। পথে সড়ক দুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যু হয়। আনন্দঘন পরিবেশ থেকে মুহূর্তেই বিষাদ নেমে এসেছে ফখরুলের পরিবারে।
ফখরুল ভূঁইয়ার বাড়ি নরসিংদী শহরের পূর্ব দত্তপাড়ায়। শুক্রবার দুপুরে মাগুরা সদর উপজেলার মঘীর ঢাল এলাকায় দুটি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে তিনি নিহত হন।
নিহতের ভাই লিওন ভূঁইয়া বলেন, ‘মেয়ের বিয়ের বাগদান করতে এসে ফিরতে হচ্ছে ভাইয়ের লাশ নিয়ে।’

প্রতীকী ছবি

ফখরুলের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভাতিজির বিয়ের কথা চূড়ান্ত করতে যশোর শহরের ষষ্টিতলায় যাওয়ার কথা ছিল তাঁদের। এ উদ্দেশ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নরসিংদী থেকে মাগুরার মহম্মদপুরে এক আত্মীয়ের বাড়িতে আসেন তাঁরা। শুক্রবার সকালে সেখান থেকে একটি মাইক্রোবাসে করে যশোর যাওয়ার উদ্দেশে বের হন। কিন্তু মাইক্রোবাসে সবার জায়গা সংকুলান না হওয়ায় মাগুরা শহর থেকে ফখরুলসহ পরিবারের তিন সদস্য ওঠেন বরিশাল থেকে আসা চাকলাদার পরিবহনে।মুখোমুখি সংঘর্ষের পর বাস খাদে, নিহত ৪

আরও পড়ুন

পরিবারের সদস্যরা জানান, ওই বাসের পেছনেই ছিল তাঁদের মাইক্রোবাসটি। বেলা দেড়টার দিকে মাগুরা শহর ছাড়িয়ে কয়েক কিলোমিটার দূরে মঘীর ঢাল এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা সোহাগ পরিবহনের একটি বাসের সঙ্গে ওই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে চাকলাদার বাসটি রাস্তার পাশে কয়েক ফুট গভীর খাদে পড়ে যায়। ওই সময় সোহাগ পরিবহনের ওই বাসের সঙ্গে তাঁদের মাইক্রোবাসেরও সংঘর্ষ হয়। তবে মাইক্রোবাসের কেউ বড় ধরনের হতাহত হননি। বাস দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থলেই মারা যান ফখরুল ভূঁইয়া। তবে ওই বাসে থাকা তাঁদের পরিবারের অন্য দুই সদস্যের কেউ গুরুতর আহত হননি।

একই দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ওই বাসের সুপারভাইজার, চালকের সহকারীসহ আরও তিনজন। নিহতেরা হলেন যশোর সদর উপজেলার রূপদিয়া গ্রামের মো. আমিনুর রহমান (৪২), একই উপজেলার সংকরপুর গ্রামের আরিফ মোল্লা (৪০) ও যশোরের শার্শা উপজেলার বেলতা গ্রামের নূর ইসলাম (৫৫)। এই দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ১৭ জন।
মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) মোহাম্মদ ইব্রাহিম প্রথম আলোকে জানান, দুর্ঘটনার পরপরই পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী দল উদ্ধারকাজ শুরু করে। চাকলাদার পরিবহনের বাস খালের পানির মধ্যে আংশিক ডুবেছিল।