শাল্লার ঘটনায় গ্রেপ্তার শহিদুল যুবলীগের কেউ নন, দাবি সংগঠনের

সুনামগঞ্জ জেলা যুবলীগের পক্ষ থেকে আজ শনিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক খন্দকার মঞ্জুর আহমদ
প্রথম আলো

সুনামগঞ্জের শাল্লার নোয়াগাঁও গ্রামে সংখ্যালঘুদের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় করা মামলায় গ্রেপ্তার প্রধান আসামি শহিদুল ইসলাম ওরফে স্বাধীন (৫০) যুবলীগের কেউ নন বলে সংগঠনটির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। শহীদুলকে গতকাল শুক্রবার রাতে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া শহর থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

শহীদুলের বাড়ি সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার সরমঙ্গল ইউনিয়নের নাসনি গ্রামে। তিনি ওই ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য। স্থানীয় বাসিন্দা ও রাজনৈতিক দলের কর্মীরা বলছেন, শহিদুল ইসলাম ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি। এ ছাড়া গতকাল রাতে দিরাই ও শাল্লা থেকে আরও সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ৩০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

তবে যুবলীগ দাবি করেছে, তাদের সংগঠনের সঙ্গে শহিদুল ইসলামের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। জেলা যুবলীগের পক্ষ থেকে আজ শনিবার দুপুরে সুনামগঞ্জ পৌর শহরে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে তারা এই দাবি করে। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক খন্দকার মঞ্জুর আহমদ। এ সময় সংগঠনের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য নুরুল ইসলাম, সবুজ কান্তি দাস, সীতেশ তালুকদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০০৭ সালের পর থেকে দিরাই ও শাল্লায় যুবলীগের কোনো সাংগঠনিক কমিটি নেই। তাই যাঁরা শহিদুল ইসলামকে যুবলীগের নেতা বলে প্রচার করছেন, সেটা সঠিক নয়। এটা ঘটনাকে আড়াল করার ষড়যন্ত্র বলে তাদের দাবি।

তবে দিরাই উপজেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শহিদুল ইসলামকে উপজেলা যুবলীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে দেখা যেত। তিনি যুবলীগে সক্রিয়। উপজেলা কমিটির সভাপতি রঞ্জন রায়ের ঘনিষ্ঠজন শহিদুল। তাঁর সঙ্গে প্রায় সময় শহিদুল ইসলামকে দেখা যেত।

এ ব্যাপারে রঞ্জন রায় দাবি করেন, শহিদুল ইসলাম যুবলীগের কেউ নন। যুবলীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে তিনি সক্রিয় ছিলেন—বিষয়টি জানালে তিনি বলেন, ‘যুবলীগে হাজার হাজার কর্মী-সমর্থক আছে। অনেকেই তো আসে। নির্দিষ্ট করে বলতে পারব না শহিদুল কখনো এসেছেন কি না।’

জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক খায়রুল হুদা বলেন, ‘আমরা এই ন্যক্কারজনক ঘটনায় জড়িত সবার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। ঘটনার পর থেকে সংগঠনের নেতা-কর্মীরা নোয়াগাঁও গ্রামবাসীর পাশে আছেন। দিরাইয়ে ২০০৭ সালে রঞ্জন রায়কে আহ্বায়ক করে উপজেলা কমিটি করা হয়েছিল। পরে ২০১৫ সালের সম্মেলনে সভাপতি হিসেবে শুধু রঞ্জন রায়ের নাম ঘোষণা করা হয়। এরপর আর উপজেলার পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি। যেখানে উপজেলা কমিটিই নেই, সেখানে ইউনিয়ন বা ওয়ার্ড কমিটি থাকার তো প্রশ্নই ওঠে না।’

নোয়াগাঁও গ্রামের ঝুমন দাস (২৮) হেফাজতে ইসলামের নেতা মাওলানা মামুনুল হককে নিয়ে ফেসবুকে আপত্তিকর পোস্ট দিয়েছেন—এমন অভিযোগ তুলে গত বুধবার সকালে আশপাশের চার গ্রামের লোকজন ওই গ্রামে হামলা চালায়। এ ঘটনায় পরদিন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শাল্লা থানায় দুটি মামলা হয়। একটি মামলা করে শাল্লা থানার পুলিশ, অপর মামলাটি করেন নোয়াগাঁও গ্রামের বাসিন্দা স্থানীয় হবিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিবেকানন্দ মজুমদার।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন